সুকুমার সরকার, ঢাকা: ঢাকায় নাশকতামূলক কাজে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিল হুগলির যুবতী প্রজ্ঞা দেবনাথ। শুধুমাত্র জঙ্গি হওয়ার জন্যই ধর্ম পালটে করে একজন বাংলাদেশিকে বিয়ে করে ঢাকায় আশ্রয় নিয়েছিল বলেও জানাল আদালতে।
১৭ জুলাই ঢাকার মতিঝিল থানার পুলিশ সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গ্রেপ্তার করে আয়েশা জান্নাত মোহনা ওরফে জান্নাতুত তাসনিম (২৫) ওরফে প্রজ্ঞা দেবনাথকে। এরপর বুধবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (CMM) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম সূত্রে খবর, ভারতীয় এই নারী জঙ্গি ও নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি (Neo JMB) -এর অন্যতম সদস্য। বুধবার চার দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওমান প্রবাসী বাংলাদেশি আমির হোসেন সাদ্দামকে মোবাইলের মাধ্যমে বিয়ে করেছিল প্রজ্ঞা। গত বছরের অক্টোবরে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আয়েশা নাম নিয়ে চলে আসে ঢাকায়। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বেশ কয়েকটি মাদ্রাসায় পরিচয় গোপন করে শিক্ষকতা করছিল। তবে নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানি গ্রেপ্তার হওয়ার পর আত্মগোপন করে আয়েশা। লুকিয়ে থেকে সাংগঠনিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিল।
ঢাকার সিটিটিসির আধিকারিকরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার ধনিয়াখালি থানা পশ্চিম কেশবপুর গ্রামের মেয়ে আয়েশা। ২০০৯ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় সে ধর্মান্তরিত হয়। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে সে অনলাইনে বিভিন্ন দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করে। এক সময়ে নব্য জেএমবির নারী শাখার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের নব্য জেএমবির নারী শাখার প্রধান আসমানি খাতুন ওরফে আসমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ হয় এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করতে থাকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা জানিয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে সে ভারত থেকে নিয়মিত বাংলাদেশে আসা যাওয়া শুরু করে। বিভিন্ন দেশে থাকা সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের দায়িত্বও পালন করেছে আয়েশা। সম্প্রতি বাংলাদেশে নাগরিক হওয়ার জন্য একটি জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে। ওই জন্মনিবন্ধন কার্ড দিয়ে সে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছে।
কাউন্টার টেররিজমের কর্মকর্তারা আরও বলছেন, আয়েশা দাওয়াতি কার্যক্রম এবং সদস্য সংগ্রহের কাজ করছিল। এ কাজের জন্য অনলাইনে বিভিন্ন আইডি ব্যবহার করত আয়েশা। সদস্যদের জন্য টাকা সংগ্রহ ও বিতরণের কাজও করেছে। সিটিটিসির কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেছেন, আয়েশার কাছ থেকে তাঁরা বেশ কিছু কাগজপত্র পেয়েছেন। ওই কাগজপত্রগুলো যাচাই বাছাই এর জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.