সুকুমার সরকার: নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিপুল পরিমাণের অস্ত্র কিনে চলেছে মায়ানমার। সামরিক শক্তি বাড়াতে ভারত, চিন, রাশিয়া ও ইজরায়েল থেকে প্রচুর যুদ্ধাস্ত্র সংগ্রহ করে চলেছে দেশটি। সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
[আরও পড়ুন: ৯৩ শতাংশ ওষুধই মেয়াদোত্তীর্ণ! বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা]
সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, ভৌগলিক অবস্থান ও অস্ত্রের বাজার হিসেবে এশিয়ার মধ্যে মায়ানমার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ৷ ফলে পাহাড়ি দেশটিকে চটাতে চাইছে না কেউই। উপরন্তু বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে অস্ত্র কেনায় ছাড়ও পাচ্ছে নাইপিদাও। ফরাসি সংবাদ সংস্থাটির দাবি, অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সামরিক বৌদ্ধতন্ত্রের প্রচারে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্টে ‘সন্ত্রাসদমন’ অভিযান জোরাল করার আগের কয়েক মাস ধরে সেনাপ্রচারে সেই বিদ্বেষ জোরদার হয়ে ওঠে। এরপর শুরু হয় রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ। অভিযোগ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলে অমানবিক অত্যাচার।গণধর্ষণ, গণহত্যার মতো ঘটনা হয়ে ওঠে জলভাত। ফলে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা। আপাতত ঢাকার আশ্রয়ে রয়েছে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী।
রোহিঙ্গা নিপীড়নের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নানা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে মায়ানমারকে। ‘টাটমাদাও’ বা দেশটির সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এসব নিষেধাজ্ঞার পরও অস্ত্র কিনতে মায়ানমার সেনাকে বেগ পেতে হচ্ছে না। তারা অস্ত্র কেনা অব্যাহতই রেখেছে।
উল্লেখ্য, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই) এর মতে, মায়ানমারকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করছে চিন। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালে মায়ানমারের ৬৮ শতাংশ অস্ত্রের আমদানি হয়েছে চিন থেকেই। এসআইপিআরআই-এর গবেষক সিমন উইজেম্যান জানান, সাঁজোয়া যান, সারফেস টু এয়ার মিসাইল প্রযুক্তি, রাডার ও ড্রোন-সহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ছিল এর মধ্যে। বিশ্ব মঞ্চে মায়ানমারের অন্যতম বন্ধু রাশিয়া। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শুইগু ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মায়ানমার সফর করেন এবং ৬টি এসইউ-৩০ বিমান বিক্রি নিয়ে একটি চুক্তিতে সই করেন। এদিকে আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে চিনকে টেক্কা দিতে প্রতিবেশী মায়ানমারের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও মজবুত করেছে ভারত। পাশাপাশি, মায়ানমারের সঙ্গে ইজরায়েলের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যেও মায়ানমার সরকারকে জল বিশুদ্ধকরণ সিস্টেম প্রদান করে ইজরায়েল। সবমিলিয়ে, খাতায় কলমে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অস্ত্র কেনায় কার্যত কোনও বাধাই নেই মায়ানমারের৷
[আরও পড়ুন: ভাষা অজানা, ইউক্রেনীয় হ্যাকারদের মূল চক্রীকে ধরতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা পুলিশ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.