প্রতীকী ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: ডেঙ্গুর করাল থাবার মাঝেই বাংলাদেশে নতুন আতঙ্ক কিউলেক্স মশা। গত দুমাসে রাজধানী ঢাকায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে এই মশার প্রকোপ। ক্রমশ ভয়ংকর হচ্ছে পরিস্থিতি। মশার জ্বালায় প্রাণ ওষ্ঠাগত ঢাকাবাসীর। ডেঙ্গুর লাগামছাড়া বাড়বাড়ন্তের মাঝেই এই মশা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসক মহল।
জানা গিয়েছে, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকায় কিউলেক্স মশার প্রকোপ ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে। এর মধ্যে উত্তরের অঞ্চলগুলোতে এর বাড়বাড়ন্ত সবচেয়ে বেশি। ঢাকার সাভার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত এক ধারাবাহিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসের তুলনায় চলতি মার্চ মাসে কিউলেক্স মশার প্রকোপ ৪০ শতাংশ বেড়েছে। এনিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “গত বছরের অক্টোবর থেকে আমরা ধারাবাহিকভাবে মশার উপর সমীক্ষা করছি। এবং প্রতি মাসে আমরা আগের মাসের তুলনায় মশার বৃদ্ধি দেখছি।”
কীটতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, দেশে প্রায় ১২৩ প্রজাতির মশা আছে। এর মধ্যে ১৬ প্রজাতির মশার প্রকোপ বেশি। রাজধানী-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বছরজুড়ে যে কয়েক প্রজাতির মশা থাকে, এর মধ্যে কিউলেক্স ৯৫ শতাংশের বেশি। এই মশার কামড়ে গোদ ও নানা ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। মশা মারতে কয়েল, অ্যারোসল, মশা তাড়ানোর বৈদ্যুতিক যন্ত্র কোনও কিছুই বাদ দিচ্ছেন না ঢাকার উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম। তাঁর কথায়, “রাতে খাওয়ার সময় ডাইনিংয়ে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। বাড়ির কোথাও বসে একটু বিশ্রাম করার উপায় নেই। সকাল, সন্ধ্যা, রাত—সব সময় প্রায় একই অবস্থা। মশা কমছেই না।”
মশার তাণ্ডব নিয়ে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ দুই অঞ্চলের কর্পোরেশনের বক্তব্য, মশার উপদ্রব নিয়ে কথা হয়েছে দুই অঞ্চলের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে। উত্তর সিটির প্রধান স্বাস্থ্যকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানিয়েছিলেন, “উত্তরায় মশার প্রকোপ বৃদ্ধির মূল কারণ সেখানকার বেশ কিছু খাল রাজউকের নিয়ন্ত্রণাধীন। সেগুলোতে আমরা কাজ করতে পারি না। আবার মেট্রোরেলের লাইনের পাশে একটি নালা আছে। সেখানেও জল জমে থাকে। এ ব্যাপারে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে আমরা জানিয়েছি। আর শুধু কিউলেক্স নিয়ে শিগগিরই আমরা সমীক্ষা করছি। এর পর আরও কার্যকর ব্যবস্থার দিকে যাব আমরা।”
দক্ষিণে কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবির। তিনি বলেন, “বিচ্ছিন্নভাবে কিছু এলাকায় মশার উপদ্রব আছে, এটা আমরা জানি। যেমন হাজারীবাগ। এটা নিচু এলাকা। সেখানে ডোবা–নালা আছে।” কিন্তু ডেঙ্গুর মাঝেই এই মশার উৎপাত নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকমহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.