সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও ফরিদপুরের মাঝে পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। আর এই কাজ সম্পন্ন করতে শিশুদের মাথা লাগবে বলে ছড়িয়েছে গুজব। এর জেরে গত দু’সপ্তাহ ধরে ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে অপরিচিত ব্যক্তিদের পিটিয়ে মারা হচ্ছে। রবিবারও নওগাঁ ও কুমিল্লা জেলায় গণপিটুনির শিকার হয়েছেন তিনজন।
অন্যদিকে শনিবার এক মহিলাকে পিটিয়ে মারা হয় ঢাকায়। পরে জানা যায়, ওই মহিলা তাঁর সন্তানকে স্কুলে ভরতি করতে নিয়ে আসছিলেন। সেসময় তাঁকে পিটিয়ে খুন করে উত্তেজিত জনতা। এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই গণধোলাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় বাংলাদেশ পুলিশ। এই ঘটনার পিছনে কারা উসকানি দিয়েছিল, তাদের খোঁজ চলছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’সপ্তাহে সারাদেশে ৩১টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। আর জখম হয়েছেন ২২ জন। আগের ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে না হলেও শনিবারের ঘটনাকে ফৌজদারি অপরাধ বলে উল্লেখ করে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়েছে পুলিশ। যে কোনও মূল্যে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করার জন্য এই কাজ করছে তারা।
এবিষয়ে এআইজি সোহেল রানা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি গুজব ছড়ানো হয়েছে। এর জেরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে। এভাবে গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে। এটা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ। তাই গুজবে কান দেবেন না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, যে কোনও ব্রিজ বা বিল্ডিং তৈরিতে মানুষের রক্ত বা শিশুদের মাথা লাগে, এই ভ্রান্ত ধারণা যুগ যুগ ধরে রয়েছে। যখন এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে তখন অপরিচিত মানুষ দেখলেই জনতা হিংস্র আচরণ করে। প্রশাসনকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি এবিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে তবে। তবেই সব স্বাভাবিক থাকবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.