সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহের পর হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল বাংলাদেশের উত্তর প্রান্তের জেলা দিনাজপুর। অভিযুক্ত এখনও অধরা থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে আত্মীয়-পরিজন ও প্রতিবেশীদের। তদন্তে নেমেছে পার্বতীপুর মডেল থানা।
ঘটনা শনিবারের। দুপুর নাগাদ রঘুনাথপুর মধ্য ডাঙাপাড়ার গ্রামে বন্ধুর সঙ্গে খেলছিল সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যা। তার খেলার সঙ্গী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাকে চকলেট দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী আমজাদ হোসেন। এরপর হোসেন তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায়। বিকেল গড়িয়ে গেলেও শিশুকন্যার কোনও খোঁজ না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন তার মা, বাবা। মেয়েকে খুঁজতে শুরু হয় মাইকিং।
এই সময়ে অন্যান্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে মাইকিংয়ে যোগ দেয় আমজাদ হোসেন। কিন্তু তার আচরণ দেখে সন্দেহ হয় অন্যদের। সঙ্গে সঙ্গে হোসেনকে তার বাড়িতে টেনে নিয়ে যায় কয়েকজন। কিন্তু দেখা যায়, ঘরের তালা বন্ধ। হোসেন জানায়, চাবি তার কাছে নেই। অন্যত্র রেখে এসেছে। সেই চাবি আনতে যাওয়ার নাম করে হোসেন পালিয়ে যায়।
এরপর তার ঘরের দরজার তালা ভেঙে দেখা যায়, একটি টেবিলের নিচে পড়ে রয়েছে শিশুকন্যার দেহ। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে পার্বতীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আসার পথেই মৃত্যু হয়েছে শিশুকন্যার। শারীরিক পরীক্ষা করে তার শরীরে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সাড়ে তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা টেবিলের নিচে দেহ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে।ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে নেমে অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। তাকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করাই প্রাথমিক কাজ। পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘অভিযুক্ত আমজাদ ওই গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে তার চাচা শাহিনুর আলমকে আটক করেছে পুলিশ।’ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শিশুর মা নাসরিন জাহান বলেন, ‘আমি ওই ছেলের ফাঁসি চাই। আর কোনও মায়ের কোল যেন এ ভাবে খালি না হয়।’ অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত গ্রামের ক্ষোভের পরিবেশ জারি রয়েছে গ্রামে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.