সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিয়ে করার অদম্য নেশা, আর তার জেরে এখনও পর্যন্ত এক ডজন মহিলাকে বিয়ে করে ফেলেছেন তিনি। গুঞ্জন, এই ১২ জন মহিলা আইনত তাঁর স্ত্রী। কিন্তু আরও অনেকেই রয়েছে, যাঁদের পরিচয় গোপন রেখে বিয়ে করেছেন তিনি। শুধু বিয়ে করাই নয়, বিয়ের পর তাঁদের প্রত্যেককে প্রৌঢ়ের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। বছর পঞ্চান্নর বাংলাদেশি প্রৌঢ়ের এহেন কার্যকলাপ নিয়ে স্ত্রীরা থানার দ্বারস্থ। হতবাক পুলিশও।
বাংলাদেশের উত্তরের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দা আবুল হাসেম ভেন্ডার। স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসেম একজন মাদক ব্যবসায়ী ও অসৎ প্রকৃতির মানুষ। তার একটি পানের দোকান ছিল। এখন তিনি স্ট্যাম্প ব্যবসায়ী। প্রথম স্ত্রীকে বিয়ের পর শ্বশুরের মৃত্যু হলে সুকৌশলে তাঁর জায়গা, জমি সব লিখিয়ে নেন নিজের নামে। বিয়ে করা তার নেশা। পঞ্চগড় জেলার ময়দান দিঘি, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া, আখানগর, জগন্নাথপুর বাহাদুর পাড়া, মাদ্রাসাপাড়া, আদর্শ বাজার কলোনি পাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় একে একে সে ১২টি বিয়ে করে। এছাড়া পরিচয় গোপন করেও অনেক স্ত্রী আছে তার।
হাসেমের এক স্ত্রী বলেন, ”আবুল হাসেম একজন ভয়ংকর প্রকৃতির লোক। তার নির্যাতনের কথা আমি বলে শেষ করতে পারব না। তিনি আমাকে মারার জন্য অনেক কৌশল করেছেন। আমার মা-ভাই-বোনদের পথে বসিয়েছেন। প্রতিবাদ করলেই আমার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে।” আরেক স্ত্রীর কথায়, ”হাসেম একজন অসৎ মানুষ। তিনি আমার ওপর প্রায় সময় নির্যাতন চালাতেন। ভরণ-পোষণ ঠিক মতো দিতেন না। তিনি সুকৌশলে আমার কাছে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপমানমূলক কথা বলে বেড়াচ্ছেন।” এ প্রসঙ্গে আবুল হাসেমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্বিকার চিত্তে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, ”বিয়ে আমার প্রয়োজন ছিল, সে জন্য করেছি। এটা তো তেমন কোনও বিষয় না”।
বালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মতে, ”হাসেম ভেন্ডারের বিয়ে করাটা নেশায় পরিণত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।” এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ”শহরের মাদরাসাপাড়া মহল্লার এক নারী হাসেম ভেন্ডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন। আমরা ওই নারীকে পারিবারিক আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.