সুকুমার সরকার, ঢাকা: শাসকদল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মানুষ হিসেবে তিনি বেশ সৌখিন। বিভিন্ন সৌখিন জিনিষ ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু, এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় কাদের জানালেন, এসব উপহার। তার হাতে আর পরনে যেসব দামি ঘড়ি আর পোশাক দেখা যায় তা সবই কর্মীদের ‘ভালোবাসার উপহার’।
গত ডিসেম্বরে ওবায়দুল কাদেরের ঘড়ি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় সুইডেনভিত্তিক একটি বাংলা অনলাইন নিউজ পোর্টালে। এরপরই বাংলাদেশ থেকে ওই পোর্টাল দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত বৈঠকে সাংবাদিকরা এই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে শাসকদলের সাধারণ সম্পাদক এবং হাসিনা সরকারের সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর দাবি করেন, এসব তাঁর নিজের কেনা নয়। বলেন, ‘আমার যত ঘড়ি আছে একটাও আমার নিজের পয়সায় কেনা নয়। ধরেন, আপনি বিদেশে গেলেন আর ফিরে এসে আমাকে একটা ঘড়ি দিলেন, আমি নিলাম।’
ওই প্রতিবেদনে ওবায়দুল কাদেরের হাতে থাকা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাতটি ঘড়ির ছবি দিয়ে দেখানো হয়েছে, সেটি কোন ব্র্যান্ডের এবং কোনটির দাম কত। বলা হয়েছে, বিখ্যাত সব কোম্পানির ওই ঘড়িগুলোর বাজারমূল্য ৯ থেকে ২৮ লক্ষ টাকা। এপ্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা একেবারে ফর গডস সেক। আমি বলছি ঘড়ি আর আমার দামি পোশাকগুলি আমার কেনা না। আমি পাই কারণ আমাকে অনেকে ভালবাসে। আমার অনেক কর্মী যারা বিদেশে আছে, আসার সময় স্যুট নিয়ে আসে। গতকাল সিঙ্গাপুর থেকে একজন তিনটে কোট বানিয়ে নিয়ে এসেছেন। এ রকম এখন আপনি যদি নিয়ে আসেন, আমাকে উপহার দেন, আমি কি করব? এটা গিফট আইটেম!’
গত জাতীয় নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া হলফনামার সঙ্গে মিলিয়ে নিউজ পোর্টালটি দেখানোর চেষ্টা করেছে, ওই সাতটি ঘড়ির মধ্যে একটির দামই সেতুমন্ত্রীর এক বছরের আয়ের প্রায় সমান। হলফনামায় ওইসব ঘড়ির কোনও উল্লেখও নেই। এর মধ্যে অত্যন্ত দামি একটি ঘড়ি কোনও একটি কন্ট্রাক্ট পাইয়ে দেওয়ার বদলে তিনি ঘুষ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারব, কোনও কন্ট্রাকটরকে বসতেও দিই না। আমার কোনও কন্ট্রাকটরের বৈঠক হয় না, যেটা হত অতীতে। আজকাল প্রমোশনের জন্যও কোনও সুপারিশ করা হয় না। কন্ট্রাকটররা ইলেকশনের আগে টাকা দিতে চেয়েছিল, সরাসরি না করেছি। আমাকে ইলেকশনের টাকা প্রধানমন্ত্রী নিজেই দিয়েছেন, কারও থেকে টাকা নিতে হয়নি।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.