Advertisement
Advertisement
JMB

অশান্ত বাংলাদেশে জেল ভেঙে পলাতক বহু, ফের সক্রিয় স্লিপার সেল! সীমান্তে উদ্বেগ

হাসিনার আমলে জঙ্গি বিরোধী নীতির কারণে যে জেএমবি একেবারে ঘুমন্ত হয়ে গিয়েছিল, তারাই আবার জেগে উঠছে, এমনই খবর গোয়েন্দা সূত্রে।

JMB terrorists may plot attack on West Bengal as many of them fleed from breaking jail in unrest Bangladesh

ফাইল ছবি

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 8, 2024 9:29 pm
  • Updated:December 8, 2024 9:29 pm  

অর্ণব আইচ: দেশে অরাজক পরিস্থিতি। মাথাচাড়া দিচ্ছে মৌলবাদীরা। অশান্তিতে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসলামপন্থী একাধিক রাজনৈতিক সংগঠনের বিরুদ্ধে। আর এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যেই সম্প্রতি বাংলাদেশের জেল ভেঙে প্রায় ৭০০ জঙ্গি পালিয়েছে বলে অভিযোগ। আর তাতেই চিন্তা বেড়েছে। সীমান্তে জঙ্গিদের স্লিপার সেলগুলি এই সুযোগে ফের সক্রিয় হচ্ছে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের। হাসিনার আমলে জঙ্গি বিরোধী নীতির কারণে যে জেএমবি একেবারে ঘুমন্ত হয়ে গিয়েছিল, তারাই আবার জেগে উঠছে। বিশেষ নজর মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া সীমান্তে। এসব জায়গার কাঁটাতারহীন বিস্তীর্ণ এলাকা অনুপ্রবেশের প্রশস্ত পথ।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের অনুমান, আইএসআইয়ের মদতে বাংলাদেশে শক্তি বাড়াচ্ছে জেএমবি। এই রাজ্যে জঙ্গি নেটওয়ার্ক তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে জামাত-উল-মুজাহিদিনের নেতারা। এবার প্রথম তিনটি জেলায় নতুন জঙ্গি মডিউল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইএসআই ও জেএমবি। এর পর আরও অন্তত চারটি জেলায় তারা মডিউল তৈরির ব‌্যাপারে আলোচনা করেছে ও প্রস্তুতিও নিতে শুরু করেছে। সম্প্রতি একটি বৈঠকে এই ব‌্যাপারে রাজ‌্য পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দাদের সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সূত্রের খবর, এই সতর্কবার্তা পাওয়ার পর সীমান্ত এলাকা তো বটেই, কলকাতাতেও বিশেষ নজরদারি শুরু হয়েছে।

Advertisement

২০১২ সালে খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জেএমবির উপর নজর পড়ে গোয়েন্দাদের। ক্রমে এই রাজ‌্য-সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার হতে শুরু করে জেএমবি নেতা ও লিঙ্কম‌্যানরা। কলকাতা থেকেও গ্রেপ্তার হয় অনেকে। কলকাতা পুলিশ ও রাজ‌্য পুলিশের সঙ্গে তৎকালীন বাংলাদেশ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা হয়। এর ফলে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে ওই দেশ থেকেও গ্রেপ্তার হয় বহু জঙ্গি। এক কথায়, দুদেশেই জেএমবি ও নব‌্য জেএমবির শিরদাঁড়া ভেঙে দেন গোয়েন্দারা। গোপন সূত্রের খবর অনুযায়ী, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পাক চর সংস্থা ইতিমধ্যেই নতুন করে যোগাযোগ শুরু করেছে জেএমবির সঙ্গে। এর মধ্যেই জেএমবির কয়েকজন নেতার সঙ্গে রাজসাহী-সহ কয়েকটি জেলার ডেরায় বৈঠক হয়েছে আইএসআই এজেন্ট ও আধিকারিকদের।

আইএসআইয়ের নির্দেশে জেএমবি টার্গেট করেছে অসম ও পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জায়গা। অসমের বরপেটা, নলবাড়ি, ধুবড়িকে জেএমবি টার্গেট করেছে। এ ছাড়াও এই রাজ্যে আপাতত জঙ্গিদের টার্গেট মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও উত্তর দিনাজপুর জেলা। এর আগে এই তিনটি জেলায় জেএমবি মডিউল তৈরি করেছিল। এখনও এই জেলাগুলিতে জেএমবির পুরনো স্লিপার সেলের সদস‌্যরা রয়েছে, যারা এখন সক্রিয় নয়। জেএমবি নেতাদের আইএসআই নির্দেশ দিয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি এই তিনটি জেলায় নেটওয়ার্ক বাড়াতে হবে। এর পর বীরভূম, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নেটওয়ার্ক তৈরি করছে জেএমবি।

এদিকে, বিএনপি-জামাত জোট থেকে শুরু করে প্রাক্তন সেনাকর্তার মুখে ভারতের বিস্তীর্ণ অংশ দখলের হুঁশিয়ারি। সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের হুমকি শোনা গিয়েছে বিএনপি-র যুগ্ম মহাসচিবের গলায়। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, স্লিপার সেলগুলির কাজের মধ্যে দিয়েই কি ‘বিশেষ প্রযুক্তি’র কথা বলছেন তিনি? জেএমবি-র কার্যপ্রণালী অনুযায়ী, ক্রমাগত মগজধোলাইয়ের পর সেখানে শুরু হবে জঙ্গি নিয়োগের প্রক্রিয়া। একই সঙ্গে স্লিপার সেলের ‘ঘুমন্ত’ সদস‌্যদের সক্রিয় করে তুলতে হবে। কয়েকটি জায়গায় তৈরি করতে হবে নতুন জঙ্গি মডিউল। বাড়াতে হবে জঙ্গি নেটওয়ার্ক। এর পর নিয়োগ করা সদস‌্যদের প্রশিক্ষণের ব‌্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে আগের পদ্ধতিতে সদস‌্যদের পাকিস্তান অথবা পাক অধিগৃহীত কাশ্মীরে নিয়ে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এছাড়াও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেও তৈরি করা হতে পারে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির। বিস্ফোরক নির্মাণ ও প্রয়োগ শিখিয়ে শুরু হবে নাশকতার ছক তৈরি। এভাবেই এদেশের বড়সড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা হতে পারে। তবে সবদিকে কড়া নজর রয়েছে গোয়েন্দাদের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement