সুকুমার সরকার, ঢাকা: ছাত্র আন্দোলনে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বাংলাদেশ জামাত-ই-ইসলামি ও ইসলামি ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে হাসিনা সরকার। জারি করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জামাতের আমির বা প্রধান ডা. শফিকুর রহমান। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে চুপ করে রয়েছে পাকিস্তানপন্থী দলটির সমর্থক বিএনপি।
বৃহস্পতিবার, জামাত-ই-ইসলামি এবং ইসলামি ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারির পর ঢাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কারণ এর ফলে ফের হিংসা ছড়াতে পারে দেশে। বিজ্ঞপ্তি জারির পরই বিবৃতি দিয়ে জামাতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, “সরকার ছাত্রদের অরাজনৈতিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য দলীয় ক্যাডার ও রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। সরকারের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে দেশের শিক্ষক সমাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। বিশ্বসম্প্রদায় এই গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছে। সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য বাংলাদেশ -জামাত-ই ইসলামি ও ইসলামি ছাত্রশিবির-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চলমান আন্দোলনকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে। জামাত একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি আন্দোলন। দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবতার কল্যাণে জামাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দরিদ্র অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি আমরা। সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেই জামাতের মূল কাজ ইসলামের দাওয়াত, মানুষের চরিত্র সংশোধন ও ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠার কাজ কখনও বন্ধ হবে না। আমি বাংলাদেশ জামাতের সর্বস্তরের জনশক্তিকে ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
এদিকে জামাতকে যখন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তখন একটি শব্দও খরচ করেনি বিএনপি। এই বিষয় নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে দলের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানিয়ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এনিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আগে দলীয় ফোরামে আলোচনা হোক। এখনই এনিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন চুপ থেকে জল মাপছে বিএনপি। জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় দেশের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইছে তারা। রাজাকারদের সঙ্গে যুক্ত জামাতকে নিষিদ্ধ করে দেওয়াতে হাসিনাকে সরকারকে কতটা সমর্থন জানাচ্ছে সেদিকেই নজর রাখছে খালেদা জিয়ার দল। কারণ জনগণের সামনে নিজের ভাবমূর্তি খারাপ করতে চায় না তারা।
উল্লেখ্য, জামাত-শিবির ‘আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে ধ্বংসের চেষ্টা করবে’আশঙ্কা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিদের ঠাঁই হবে না। আমি দেশবাসীকে সজাগ থাকতে এবং তাদের সহযোগিতা চাই। আমি জানি বার বার আঘাত আসবে, আমি পরোয়া করি না। মানুষের কল্যাণের কাজ আমরা করেই যাব। এদের জঙ্গি সংগঠন হিসেবে মোকাবিলা করতে হবে।” গত সোমবার আওয়ামি লিগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় সভায় জামাত শিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন জোটের শীর্ষ নেতারা। হাসিনার সভাপতিত্বেই সেই বৈঠক হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.