কৃষ্ণকুমার দাস: ভোটের ফল বিএনপি-জামাতের পক্ষে না গেলে ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুড়ে সিরিয়াল বোমা বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দূর সম্পর্কের বোন সায়রা বেগমের লন্ডনের বাড়িতে খালেদা পুত্র তারেক রহমান ও আইএসআই-এর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদমর্যাদার এক শীর্ষ অফিসার এক বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়েত নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, বুদ্ধিজীবী হত্যার দুই মূল অভিযুক্ত ঢাকায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চৌধুরি মঈনউদ্দিন ও আশরাফুল আলম। বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে পুলিশ-র্যাবের উপর হামলা চালিয়ে সরকারি গাড়ি ও সম্পত্তির উপর আগুন লাগিয়ে দেওয়া হবে বলে চক্রান্ত করা হয়েছে। লন্ডনের এক নির্ভরযোগ্য সূত্রের উল্লেখ করে বাংলাদেশের একাধিক সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হতেই শুক্রবার আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ভোটে অশান্তি সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের জামাত নেতাদের হাতে ৫ মিলিয়ন ডলার সাহা়য্যও ওই বৈঠকে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এমন সংবাদ বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে খালেদা শিবিরের তরফে পালটা দাবি করা হয়েছে।
ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বাড়ছে। একে অন্যের বিরুদ্ধে নানা মাপের কুর্কীর্তি ও দূর্নীতির অভিযোগ আনছে। বিএনপির প্রার্থী তালিকায় জামায়েতের দাগী অপরাধী থাকায় পদ্মাপারে জেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে জঙ্গিদের অর্থ সাহায্য করার মামলায় জড়িত আইনজীবীকে প্রার্থী করা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। ফাঁসি হওয়া জামায়েত নেতা সাইদির দুই পুত্রকে মনোনয়ন দেওয়া নিয়েও বিএনপির নিচুতলার সাধারণ কর্মীরা বেশ খানিকটা ক্ষুব্ধ। পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত লাগোয়া সাতক্ষীরা, খুলনা, রাজশাহি ও সিলেট এবং রংপুরের মতো প্রভাবশালী এলাকায় জামায়েত শিবির নিজেদের আসনগুলি নিয়েছে। নির্বাচনী উত্তাপ যত বাড়ছে, ৩০ ডিসেম্বর ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই বিরোধীদের কোণঠাসা করতে পুরনো নানা খবরের ক্লিপিংসও নতুন করে বাজারে ছাড়ছে আওয়ামি লিগের প্রচার শিবির। শেখ হাসিনার ডিজিটাল প্রচারের দায়িত্বে রয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পুত্র সাজিদ ওয়াজেদ জয়।
এবার ২০১৫ সালের নভেম্বরে ‘আর্মস ডিলারস অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন সামনে নিয়ে এসেছে আওয়ামি লিগ। গবেষণা ভিত্তিক ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০০১ সাল থেকে অবৈধ অস্ত্রের কালোবাজারে যুক্ত হয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পুত্র। ভারতের অন্তত তিনটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন তারেকের কাছ থেকে অস্ত্র নিত। অস্ত্র ব্যবসার নেটওয়ার্কে যুক্ত ছিলেন ভারতের ছোটা শাকিল, উলফার অস্ত্রসরবরাহকারী চিনের ঝি আউ। অস্ত্র আসত চিন, লিবিয়া ও রাশিয়া থেকে। পাচার হত ভারত ও আফগানিস্তানে। ২০০৪ সালে আইএসআই-এর এক গোপন বার্তায় তারেক জিয়ার নাম জানা যায়। ওই গোপন বার্তায় উলফা নেতা অনুপ চেতিয়াকে অস্ত্রের জন্য তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছিল। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা প্রথম ওই গোপন বার্তা উদ্ধার করে। ২০০৫ সালে এক বৈঠকে মার্কিন দূত বিষয়টি উত্থাপন করলে তারেক পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে ২০০৬ সালে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে অভিযোগ করে,“তারেক ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অস্ত্র সরবরাহ করছেন।”
[ফের বিতর্কে বিএনপি, মনোনয়ন পেলেন জঙ্গি ঘনিষ্ঠ আইনজীবী শাকিলা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.