ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে জ্বলছে মায়ানমার। এই সংঘাতের আঁচ লেগেছে পড়শি দেশগুলোতে। বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমারের অন্যতম বড় শহর মংডু দখল করেছে বিদ্রোহীরা। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শয়ে শয়ে রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছেন। নতুন করে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার রোহিঙ্গা। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার। মিশরে ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস।
জানা গিয়েছে, ডি-৮ সামিটে যোগ দিতে বুধবার কায়রোতে যান ইউনুস। মায়ানমার তথা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মালয়েশিয়ার শিক্ষামন্ত্রী ড. জামব্রি আবদুল কাদিরের সঙ্গে আলোচনা করেন। বৈঠকে ইউনুস জানান, গত কয়েক মাসে ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য রাষ্ট্রসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার দাবিও জানান। রোহিঙ্গা ইস্যুতে পদক্ষেপ করার পাশাপাশি দুদেশের সম্পর্ক মজবুত করার আহ্বান জানান আবদুল কাদির।
উল্লেখ্য, মায়ানমারে বার্মিজ সেনার সঙ্গে লড়াই চলছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের। যার মধ্যে অন্যতম আরাকান আর্মি। পৃথক আরাকান দেশ গড়তে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা। কয়েকদিন আগেই আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুকা সংবাদ সংস্থা এপিকে জানান, কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ মংডু শহরের সেনাঘাঁটি দখল করে নেওয়া হয়েছে। ফলে ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের হাতেই। জানা গিয়েছে, ওই সেনাঘাঁটির কমান্ডার ব্রিগ যেন থুরেন তুনকে পালানোর সময় বন্দি বানিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু মংডুর পরিস্থিতি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে দেশের জুন্টা সরকার। এখনই কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয় তারা। বলে রাখা ভালো, মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের ৪০০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত মংডুর উপর গত জুন মাস থেকে নজর ছিল আরাকান আর্মির। এছাড়া চলতি বছরের শুরুতেই সেনাকে কোণঠাসা করে সীমান্তবর্তী দুই গ্রাম দখল করে নেয় বিদ্রোহীরা।
বলে রাখা ভালো, ২০১৭ সালের আগস্টে মায়ানমার সেনাবাহিনীর ‘গণহত্যা’ ও ‘নিপীড়নে’র মুখে দেশটি থেকে প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সবমিলিয়ে মিলিয়ে এখন ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারে বসবাস করছে। এছাড়া হিংসা, মানবপাচার এবং মাদক কারবারের কারণে ভয়ানক হয়ে উঠেছে সেদেশের একাধিক রোহিঙ্গা শিবিরের পরিস্থিতি। যা নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেয়েছে তৎকালীন হাসিনা সরকারকে। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে উত্তপ্ত মায়ানমার। ঢল নামছে রোহিঙ্গাদের। যা নিয়ে এখন চিন্তিত ইউনুস সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.