Advertisement
Advertisement

Breaking News

ইন্দো-বাংলা সহযোগিতায় দক্ষিণ এশিয়া সমৃদ্ধ হবে: হাসিনা

বাংলাদেশে জ্বালানি পাঠাতে পাইপলাইন নির্মাণের উদ্বোধন।

Indo-Bangla friendship pipeline kick starts

ফাইল চিত্র

Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:September 18, 2018 8:01 pm
  • Updated:September 18, 2018 8:01 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ‘ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া সমৃদ্ধ হবে। ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন দুই দেশের সহযোগিতার ইতিহাসে মাইলফলক। মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন। জ্বালানি তেল আমদানির জন্য শিলিগুড়ি থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী, যার মধ্যে দিয়ে জ্বালানি খাতে দুই দেশের সহযোগিতায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। মঙ্গলবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার গণভবন থেকে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। ভারতীয় ঋণের টাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনের তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পেরও উদ্বোধন করা হয় এ অনুষ্ঠানে।

[এবার দার্জিলিং থেকেই ট্রেনে চেপে বাংলাদেশ, উদ্যোগ মোদি-হাসিনার]

Advertisement

ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন’ দিয়ে অসমের নুমালীগড় তেল শোধনাগার থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হবে। এই পাইপলাইনের ১২৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে, আর ভারতের অংশে পড়েছে বাকি ৫ কিলোমিটার। ২২ ইঞ্চি ব্যাসের এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ১০ লাখ মেট্রিক টন তেল সরবরাহ করা যাবে। তবে পাইপলাইন তৈরি হয়ে গেলে প্রাথমিকভাবে বছরে আড়াই লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত থেকে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা চার লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করা হবে। ৫২০ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারতের গ্রান্ড এইড প্রোগ্রামের আওতায় পাওয়া যাবে ৩০৩ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বাপেক্স) ১৫০ কোটি টাকার যোগান দেবে। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ভারত থেকে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি শুরু করেছিল বাংলাদেশ। পাইপলাইন হয়ে গেলে তেল আমদানিতে পরিবহন খরচ ও সময় দুটোই বাঁচবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে বিদেশ থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে প্রতি ব্যারেলে পরিবহন খরচ হয় ৩ ডলারের মতো। সেই তেল চট্টগ্রামে শোধন করে সড়কপথে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। চট্টগ্রাম থেকে সড়ক পথে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় তেল পরিবহনে খরচ হয় ব্যারেল প্রতি ৪ থেকে ৫ ডলার। ফলে পরিবহন ব্যয় দাঁড়ায় সব মিলিয়ে ৭ থেকে ৮ ডলার। আর ভারত থেকে পাইপলাইনে পরিশোধিত তেল এনে দেশের উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করতে পরিবহন ব্যয় হবে সাড়ে ৫ ডলারের মতো।

[বাজার ছেয়েছে নকল জামদানিতে, মার খাচ্ছেন বাংলাদেশের কারিগররা]

২০১৫ সালে দুই দেশের মধ্যে এই পাইপলাইন নির্মাণের আলোচনা শুরুর পর একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। গত বছরের আগস্টে দুই দেশের সরকার প্রকল্পটি অনুমোদন করলে নির্মাণ কাজ শুরুর প্রস্তুতি শুরু হয়। ঢাকা-টঙ্গী সেকশনের তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ভারত সরকার ঋণ হিসেবে দেবে ৯০২ কোটি ৬৩ লাখ ৪১ হাজার টাকা। আর বাংলাদেশ সরকার ২০৪ কোটি ১৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকার যোগান দেবে। ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, টঙ্গী-জয়দেবপুর হয়ে উত্তরাঞ্চল এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও দ্রুততর হবে বলে কর্মকর্তারা আশা করছেন। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকন্স-কল্পতরু যৌথভাবে এ প্রকল্পের কাজ করবে। চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরুর তারিখ থেকে তিন বছরের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

[দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের, জানালেন হাসিনা  ]

এ প্রকল্পের আওতায় এমব্যাংকমেন্টসহ ৯৬ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেল লাইন নির্মিত হবে। এছাড়া ২৫টি কালভার্ট, ছয়টি প্লাটফর্ম, ছয়টি প্ল্যাটফর্ম শেড, ১২টি ফুটওভার ব্রিজ, চারটি স্টেশন ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস বিষয়ক মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বিদেশমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলি, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং রেলওয়ের দুটি প্রকল্পের কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদি এবং শেখ হাসিনা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement