সুকুমার সরকার, ঢাকা: ‘‘ভারতের অনেক ব্যবসায়ী বাংলাদেশে বিনিযোগে আগ্রহী। ভারতীয় ঋণে অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলমান। টাটা, বিড়লা, আদানি ছাড়াও মধ্যম মানের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহী। ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে সেখান থেকে উৎপাদিত পণ্য দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল রাজ্যগুলির বাজারে সরবরাহ করতে চায়। আমাদের লক্ষ্য, ভারত-নেপাল-বাংলাদেশকে নিয়ে হাইড্রলিক পাওয়ার স্থাপনের।’’ ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই বললেন বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সলমন এফ রহমান। ঢাকার আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সম্মেলনে বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর সংগঠন ওভারসিজ করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ওকাব) সঙ্গে আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় শিল্পপতিদের উপর ভরসার কথা শোনালেন তিনি।
আড়াই বছর ধরে কোভিডের (COVID-19) কারণে অর্থনীতির দশা বেহাল হয়ে পড়েছিল বিশ্বজুড়েই। তারপর সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War)কারণে জ্বালানি সংকটে বাংলাদেশ। এই সংকটকেই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সলমন এফ রহমান। সলমনের কথায়, ”আমরা ভারত থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি করে দেশের চাহিদা মেটাচ্ছি। তবে আমাদেরও চেষ্টা আছে, ব্যাপক বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বাড়তি ভারতেও রপ্তানি করার। আমি মনে করি, জ্বালানি সংকট মোকাবিলা করাই হবে আগামী ছ’মাসে অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে যাচ্ছেন। সেখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা। অন্যদিকে, বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলও শিগগিরই রাশিয়া সফরে যাচ্ছে। রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে বিকল্প পন্থায় তেল আমদানির চিন্তা করা হচ্ছে কি? এই প্রশ্নের জবাবে সলমন বলেন, ‘‘কাতার থেকে তেল আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তারা যদি স্পট মার্কেটের বাইরে তেল বিক্রি করতে চায়, তাতে আমরা রাজি আছি।’’
হাসিনার শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সলমন এফ রহমান আরও বলেন, ”বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম বাড়লেও সেটি আমরা আনতে পারছি, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে গ্যাস। দেশের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৮০ শতাংশ চালিত হয় গ্যাসে। আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট মার্কেটে গ্যাসের দাম এত বেশি যে, আমদানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই এখন থেকে দেশের ভেতরে গ্যাস উত্তোলনের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে গ্যাস উত্তোলনের বিষয়ে চুক্তি করতে হলে প্রোডাকশন শেয়ারিং কনটাক্ট বা পিএসসি সংশোধন করতে হবে। এরই মধ্যে সরকার পিএসসির খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এটা হয়ে গেলে আমরা বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে নতুন করে দরপত্র ডাকতে পারব।”
এদিকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, জার্মানি-সহ অনেক দেশ কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে। কারণ তাদের কয়লা সরবরাহে কোনোও সমস্যা নেই। বাংলাদেশের অনেক সমস্যা থাকায় এখন থেকে সেই কাজ শুরু করলেও পাঁচ বছর লাগবে। কয়লানীতি পরিবর্তন করার আগে অনেক ভাবার আছে বলে মনে করেন সলমন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.