সুকুমার সরকার, ঢাকা: শেখ হাসিনাহীন বাংলাদেশে খানিক বদলে গিয়েছে সৌজন্যের রীতিও। এবার আর দুর্গাপুজোর উপহার হিসাবে পদ্মার ইলিশ পাবে না ভারত। কিন্তু সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে দিল্লি। আগেই ভারত থেকে ২ লক্ষের উপর ডিম পাঠানো হয়েছিল বাংলাদেশে। এবার আরও ৪৭ লক্ষ ডিম আমদানি করবে ঢাকা। আর এখানেই প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছেন কলকাতার ব্যবসায়ীরা। চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, ‘ইলিশ নিয়ে ঢাকার সবুজ সংকেত না পেলেও আমরা বাংলাদেশে ডিম তো পাঠাচ্ছি।’ বাংলাদেশে ডিমের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হল কলকাতার শ্রীলক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজ।
দুর্গাপুজোর মরশুমে পশ্চিমবঙ্গবাসী মুখিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের ইলিশ প্রাপ্তি নিয়ে। কিন্তু ইলিশ না পাওয়ার খবরে মন খারাপ তাঁদের। দুর্গাপুজো উপলক্ষে ইলিশ পাঠাতে বাংলাদেশের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ভারতের ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন। কারণ বাঙালিদের অত্যন্ত প্রিয় ও দুর্গাপুজোয় অন্যতম চাহিদা এই ইলিশ মাছের জন্য কলকাতাবাসী বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করে থাকে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছে ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা ও অসমেও যায় বাংলাদেশের ইলিশ। বিশ্বে ইলিশ চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ যোগানদাতা বাংলাদেশ।
এদিকে ডিম আমদানিকারক শাহ আলম জানান, দুমাসের সময় বেঁধে দিয়ে ৫০ লাখ ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রক। ১০ সেপ্টেম্বর তার সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। এর মধ্যে মাত্র একটি চালানে ২ ললক্ষ ৩১ হাজার ডিম আমদানি করা হয়। ভারত থেকে প্রতিটি ডিম কেনা হয়েছে ৫ টাকা ৭০ পয়সা দরে। প্রতিটি ডিমের শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে ১ টাকা ৮৩ পয়সা (অন্যান্য খরচ-সহ)। এই শুল্ক ৫০ পয়সার নিচে রাখলে বাজারে ডিমের দাম অনেক কমে যেত। যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে শুল্ক-সহ সাড়ে ৭ টাকা দরে সোমবার ২ লাখ ৩১ হাজার মুরগির ডিম আমদানি করা হয়েছে। আগামী দুমাসের মধ্যে বন্দর দিয়ে আরও ৪৭ লক্ষ ডিম আমদানি করা হবে। সব মিলিয়ে একটি ডিমের দাম পড়ছে সাড়ে ৭ টাকার বেশি। এই পরিস্থিতিতে পিঁয়াজ ও আলুর মতো ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা।
ঢাকার ‘হাইড্রো ল্যান্ড সল্যুশন’ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ডিম আমদানি করেছে। বেনাপোল কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব আধিকারিক আমির মাহমুদুল আরেফিন বলেন, “আমদানি করা ডিমের শুল্ক-সহ প্রতিটির দাম পড়েছে সাড়ে ৭ টাকা। চলতি বছরে এটিই ডিমের প্রথম চালান। গত বছর ঢাকার বিডিএস কর্পোরেশন একই দামে ভারত থেকে ৬১ হাজার ৯৫০টি ডিম আমদানি করেছিল।” বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা জানান, সাড়ে ৭ টাকায় প্রতিটি ডিম আমদানি হলেও পরিবহণ, শ্রমিক, ওয়েস্টেজ (নষ্ট ডিম) বাবদ প্রতিটি ডিমে আরও অন্তত ৩ টাকা খরচ হয়। আমদানি করা প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৬০ থেকে ৭০ পয়সা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। স্থানীয় বাজারে খুচরো দরে প্রতিটি বিক্রি হয় ১২ টাকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.