ফাইল ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: চিন ও পাকিস্তানকে টেক্কা। বাংলাদেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এবার বড় ঘোষণা করল ভারত। জানা গিয়েছে, দিল্লির আর্থিক সহায়তায় একাধিক প্রকল্প চালু করতে চলেছে ঢাকা। ফলে দু’দেশের সম্পর্কে আরও এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।
ভারত-বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সম্পর্কের বাতাবরণে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন মার্কিন ডলারের পরিবর্তে চালু হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায়। আবার মাস দুয়েকের মধ্যেই দুই দেশের সুসম্পর্কের সরণিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও কিছু সুবিধা। আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলন। ভারত বর্তমানে ওই গোষ্ঠীর সভাপতি পদে আসীন। বাংলাদেশ জি-২০-র সদস্য না হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের সম্পর্কের মর্যাদা দিতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শেখ হাসিনার সেই সফরের সময় চালু হবে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট-২। এছাড়া ৬৫-কিলোমিটার খুলনা-মংলা বন্দর রেলওয়ে এবং আখাউড়া এবং আগরতলা রেলওয়ে লিঙ্কেরও উদ্বোধন হবে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে প্রকল্পগুলির সূচনা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট-২ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের খুলনার রামপালে। ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ খুলনা-মংলা বন্দর আখাউড়া বাংলাদেশ এবং আগরতলা ভারত রেলওয়ে লিঙ্ক প্রকল্পে ভারত সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা রয়েছে। এছাড়া ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির অনুমতিও দিয়েছে ভারত সরকার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এজন্য মঙ্গলবারের বৈঠকে ভারত সরকাররে ধন্যবাদ জানান। শেখ হাসিনা আশা করেন, ভারত একই ধরণের সহযোগিতা ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্যও করবে। ভারতীয় রুপির পাশাপাশি এরপর বাংলাদেশি টাকাতেও দু-দেশের মধ্যে বাণিজ্য লেনদেন শুরু হবে। চালু হবে রুপি কার্ড এবং টাকা কার্ড।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছেন। ‘ভিশন ২০৪১’ নামে উন্নয়ন পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে ভারতের সরকার। কূটনৈতিক মহলের মতে, বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারলে উপকৃত হবে ভারতও। ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দিল্লির জি-২০ সম্মেলনে ভারত গোটা বিশ্বের পাশাপাশি বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথের আওয়াজ তুলবে বলে ভারতীয় দূতের কাছে আশা প্রকাশ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, আওয়ামি লিগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে জয়লাভ করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতাসীন হওয়ার পরেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটে। ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন হাসিনা। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেই দেশের সীমন্ত অঞ্চলে বিএনপি-জামাত শাসনামলে প্রতিষ্ঠিত দু’হাজারেরও বেশি ভারতের উগ্র ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটি গুড়িয়ে দেন তিনি। ফলে শেখ হাসিনা পরম আস্থা অর্জন করেন ভারতের। খুলে যায় দিল্লি-ঢাকা বন্ধুত্বের নতুন অধ্যায়। মূলত, চিনের দেওয়া অস্ত্র-অর্থ নিয়ে পাকিস্তানের গোয়েন্দাসংস্থা আইএসআই ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য প্রশিক্ষণ শিবির খোলে। সেগুলি গুঁড়িয়ে দেয় হাসিনা সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.