সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনার আক্রমণে জেরবার বাংলাদেশকে ফের টেস্ট কিট পাঠাল ভারত। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ বুধবার কিট-সহ জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীর তৃতীয় চালান বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে হস্তান্তর করেন। এই কিটগুলির সাহায্যে ৩০ হাজার করোনা পরীক্ষা করা যাবে।
এপ্রসঙ্গে হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি জানান, এই আরটি-পিসিআর শনাক্তকরণ কিটগুলি ভারতের ‘মাই ল্যাব ডিসকভারি সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড’ থেকে উৎপাদিত এবং কোভিড-১৯ শনাক্তকরণের জন্য ভারতে বহুল ব্যবহৃত। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই শনাক্তকরণ কিট প্রাপ্ত প্রথম অংশীদার দেশ যা এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি ভারতের গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে। ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ নীতির অংশ হিসেবে এবং কোভিড-১৯-এর বিস্তার রোধে, একটি সহযোগিতামূলক আঞ্চলিক প্রচেষ্টার লক্ষ্যে ১৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সার্ক নেতাদের নিয়ে একটি ভিডিও কনফারেন্স করেছিলেন।
দুদেশের মধ্যেকার এই বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করে বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এই মহামারি সংক্রমণের পর তিন দফায় ভারতের সহায়তার প্রশংসা করেন। বলেন, ‘শনাক্তকরণ কিটগুলি বাংলাদেশে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে দেবে, যা এই মুহূর্তে খুব প্রয়োজন।’ গত ২৯ এপ্রিল শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ রুখতে এবং স্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে এই মহামারির প্রভাব হ্রাস করতে সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হচ্ছে।
আরটি-পিসিআর পরীক্ষার কিটগুলি বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। কিটগুলি প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় সংরক্ষিত অবস্থায় ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে নিয়ে আসার পর আইইডিসিআরে পাঠানো হয়।ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃ্ত্বে ভারতের ১০ মিলিয়ন ডলার প্রাথমিক সহায়তা নিয়ে সার্ক কোভিড-১৯ জরুরি তহবিল গঠিত হয়। এই তহবিলের অধীনে ৩০ হাজার সার্জিক্যাল মাস্ক এবং ১৫ হাজার হেডকভার-সহ জরুরি চিকিৎসা সহায়তার প্রথম চালান ২৫ মার্চ বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে হস্তান্তর করা হয়। ২৬ এপ্রিল এক লক্ষ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট এবং ৫০ হাজার জীবাণুমুক্ত সার্জিকাল ল্যাটেক্স গ্লাভস-সহ জরুরি চিকিৎসা সরবরাহের দ্বিতীয় চালানটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এছাড়াও ভারতীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কাঠামোর আওতায় অনলাইন কোর্স পরিচালনা করে সার্ক দেশগুলোর চিকিৎসকদের সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে ভারত। এই জাতীয় দু’টি ই-আইটেক কোর্স ১৭-২১ এপ্রিল ২০২০ রায়পুরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস এবং ২৭ এপ্রিল, ৬ মে চণ্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ দিয়ে পরিচালিত হয়েছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ১৫০ জনেরও বেশি স্বাস্থ্য পেশাজীবী এ কোর্সগুলি করে উপকৃত হয়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি একটি ই-আইটিইসি কোর্সের আয়োজন করা হচ্ছে। এই কোর্সটি ১২-১৩ মে পর্যন্ত ভুবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস বাংলা ভাষায় পরিচালিত করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.