সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের বাংলাদেশে (Bangladesh) আক্রান্ত হিন্দুধর্ম। রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণের ৫০ কিলোমিটার দূরের জেলা মাদারিপুরে গত ১০ দিনে চারটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর। আর এই অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার (Arrest) করেছে। শেষ ঘটনা ঘটে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের চৌহদ্দি গ্রামে শ্মশানকালীর মন্দিরে। দুষ্কৃতীরা তালা ভেঙে মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা (Idol) ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চৌহদ্দি গ্রামের বাসিন্দারা ‘চৌহদ্দি সার্বজনীন শ্মশানকালী মন্দিরটি’ তিন বছর আগে গড়ে তোলেন। নিয়মিতভাবে কোনও পুরোহিতের মাধ্যমে প্রতিদিন পুজো–অর্চনা না করলেও, প্রতি বছরই এই মন্দিরে কালীপুজো করা হয়। তার পর মন্দিরটি তালাবন্ধ করে রাখা হয়।
মঙ্গলবার গভীর রাতে মন্দিরটির (Temple) তালা ভেঙে মন্দিরে প্রবেশ করে কালী মূর্তিটির উপর আঘাত করা হয় বলে খবর। সেই সঙ্গে মহাদেবের মূর্তিও ভাঙা হয়েছে। বুধবার সকালে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে মাদারিপুর সদর থানার পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। চৌহদ্দি সার্বজনীন শ্মশানকালী মন্দির কমিটির সভাপতি জগদীশ চন্দ্র বৈদ্য ও সাধারণ সম্পাদক অখিল বিশ্বাস বলেন, ‘‘মন্দিরটি যেহেতু শ্মশানকালীর, তাই একটি ফাঁকা জায়গাতেই তিন বছর আগে আমরা নির্মাণ করে কালীপুজোর (Kali puja)আয়োজন করি।”
গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার কালীর বাজার পরিতোষ ঘোষের কালী মন্দিরের ৩টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। এর ৪ দিন আগে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজৈর উপজেলার দুটি মন্দিরের প্রতিমার উপর হামলা করে দুষ্কৃতীরা। বুধবার রাতে সদর উপজেলার কালীর বাজার পরিতোষ ঘোষের কালী মন্দিরের ৩টি প্রতিমা ভাঙা হয়েছে বলে খবর। রাত ১০টার দিকে রাজু মাতুব্বর নামে এক মাদকাসক্ত ব্যক্তি মন্দিরের বেড়া ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে প্রতিমা ভাঙচুর করে। এ সময় বাজার কমিটির লোকজন বাধা দিলে সে চাপাতি নিয়ে তাঁদের দিকে তেড়ে যায়। স্থানীয়রা রাজুকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। মাদারিপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এএইচএম সালাহউদ্দিন জানান, ‘‘এ ঘটনায় রাজু মাতুব্বরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’
অন্যদিকে রাজৈ উপজেলার দক্ষিণ রাজৈর গ্রামের গণেশ পাগল মন্দিরের একই আসনে পাশাপাশি রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহও নষ্ট করে দুষ্কৃতীরা। কালীদেবীর হাত মোচড়ানো অবস্থায় দেখা গিয়েছে। প্রতিমার গায়ের অলংকার নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। একই রাতে পাশ্ববর্তী মনসা মন্দিরের প্রতিমাও ভাঙা হয়েছে। সকালে লোকজন গিয়ে প্রতিমা ভাঙা দেখতে পায়। রাজৈর উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন চৌধুরী ও রাজৈর থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুষ্কৃতীদের শাস্তির আশ্বাস দেন। মন্দিরের পাশের বাড়ির প্রভাস মণ্ডল জানান, ”সকালে উঠে দেখি মন্দিরের প্রতিমা ভাঙা।” রাজৈর থানার ওসি আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.