সুকুমার সরকার, ঢাকা: সদ্য প্রয়াত হয়েছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত সেনাশাসক তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেন মহম্মদ এরশাদ। ফলস্বরূপ, অথৈ জলে তাঁর দল ‘জাতীয় পার্টি’ (জাপ)। এতদিন চেয়ারম্যান হিসেবে, ‘কড়া হাতে’ দলের রাশ ধরেছিলেন তিনি। প্রাক্তন সেনানায়ক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও তাঁর যথেষ্ট ‘প্রভাব’ ছিল। তাই তাঁর অনুপস্থিতিতে কার্যত দিশেহারা জাপ। দলে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
[আরও পড়ুন: এরশাদের শেষকৃত্য নিয়ে সংশয় মিটল, শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী মঙ্গলবার ঢাকায় অন্তিম শয্যা]
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “জাতীয় পার্টি কোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়নি। এটি ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এখানে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব রয়েছে। দলে এরশাদের নেতৃত্বে একটি ধারা রয়েছে। আরেকটি ধারা জিএম কাদেরকে কেন্দ্র করে। এই ধারাই কিন্তু একসময় ভেঙে যেতে পারে।” তাঁর আরও বিশ্লেষণ, জাতীয় পার্টি সুবিধাবাদী রাজনীতি করেছে। যার কারণে এক সময় ক্ষমতা ভোগ করেছে তারা। এক সময় ছিটকেও পড়েছে ক্ষমতার বলয় থেকে। আবার রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজিয়ে ক্ষমতার অলিন্দে ঢুকেছিল তারা। কিন্তু সবকিছুই ছিল এরশাদকে কেন্দ্র করে। তাই তাঁর অবর্তমানে জাপ দিশাহীন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বর্তমানে জাতীয় পার্টির কোনও জনভিত্তি নেই। ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটবে দল বা গন্তব্য কী তারও ঠিক নেই। ফলে মওলানা ভাসানি ও শেরে বাংলা দলের মতো জাতীয় পার্টিও বিলুপ্ত হতে পারে বলে অনেকর ধারণা।
১৯৮২ সালে ক্ষমতা দখল করে প্রায় নয় বছর ধরে দেশ শাসন করেন এরশাদ। তারপর ১৯৯০ সালে গণ-আন্দোলনের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। কিন্তু তারপরও জাতীয় পার্টি বিস্ময়করভাবে ক্ষমতার রাজনীতিতে ফিরে আসে। রাজনীতিবিদের একাংশের মতে এরশাদকে সুনির্দিষ্ট স্বার্থে ব্যবহার করার জন্যই প্রাসঙ্গিক বানিয়ে রেখেছিল বিএনপি ও আওয়ামি লিগ উভয়েই। ফলে কোনওকালেই জাপ জনতা জনার্দনের কাছের হয়ে উঠতে পারেনি। ফলে ‘এরশাদ ভিত্তিক’ দলটির বিলুপ্তি সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
[আরও পড়ুন: ২ বছর আগেও জন্মভিটে দিনহাটায় ঘুরে গিয়েছেন এরশাদ, স্মৃতিভারাক্রান্ত পরিবার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.