সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের অন্তর্গত বঙ্গোপসাগরে মিথেন গ্যাসের (Methane gas) সন্ধান মিলেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে এই খবর জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রকের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান খুরশিদ আলম বলেন, পুরো এলাকায় এখনও সার্ভে করা হয়নি। তবে যেটুকু করা গিয়েছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে, ১৭-১০৩ টিএসএফ (TSF) গ্যাস হাইড্রেন্ট এখানে রয়েছে। আর মিথেন গ্যাসের এই নতুন ভাণ্ডার ঘিরে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উন্নতির আশা দেখছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়ার আলম।
সাংবাদিক সম্মেলনে আবদুল মোমেন জানান, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে (Economic Zone) ২২০ প্রজাতির সি-উইড (Seaweed), ৩৪৭ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪৯৮ প্রজাতির ঝিনুক, ৫২ প্রজাতির চিংড়ি, ৫ প্রজাতির লবস্টার, ৬ প্রজাতির কাঁকড়া ও ৬১ প্রজাতির সি-গ্রাস চিহ্নিত করা হয়েছে। বছর দুই আগে ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চলে এই এলাকায় সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। তাতেই সমুদ্রগর্ভে এসবের অস্তিত্ব চিহ্নিত করা হয়েছে বলে খবর।
সমীক্ষার বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চলে মিথেন গ্যাসের সম্ভার ছাড়াও তলদেশে শৈবালের সম্ভাবনা, উপস্থিতি, প্রকৃতি ও মজুত নির্ণয়ের জন্য আলাদা দুটি গবেষণা হয়। সেখান থেকে প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্যাস হাইড্রেটের উপস্থিতি এবং বিভিন্ন প্রজাতির শৈবাল ও মাছের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল তুলে ধরেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশিদ আলম। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে যতটুকু এলাকা জরিপ করেছি, তাতে ধারণা করছি, ন্যূনতম ১৭ থেকে ১০৩ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট (টিসিএফ) গ্যাস হাইড্রেটস মজুত রয়েছে সেখানে।’’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (USGS) ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সমুদ্রের তলদেশে গ্যাস ও জলের সংমিশ্রণে তৈরি হওয়া স্ফটিককে ‘গ্যাস হাইড্রেটস’ বলা হয়। তা দেখতে একেবারে বরফের মতো হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে মিথেন থাকে। এই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশের পর বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) মিথেন গ্যাস ভাণ্ডার এবং জীববৈচিত্র্যকে কাজে লাগিয়ে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। তবে তা নিয়ে বাংলাদেশ প্রশাসন কী ভাবছে, তা এখনও অজানা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.