সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) গুলশনে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা ও হত্যাকাণ্ডে দোষী সাতজনের মৃত্যুদণ্ড রদ করল ঢাকার হাই কোর্ট। তার বদলে তাদের আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। দোষী সাতজনই নব্য জেএমবি সদস্য। সাত বছর আগে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার (Terror Attack) তদন্তে নেমে ২০১৯ সালে দোষীদের ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনাল। তার বিরোধিতায় দোষীদের আবেদনের ভিত্তিতে সওয়াল-জবাবের পর সোমবার হাই কোর্ট তাদের মৃত্যুদণ্ড রদ করে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা দেয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মহম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
৭ বছর আগে, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশনের হোলি আর্টিজান (Holi Artisan Bakery) বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। বেকারিতে উপস্থিত দেশি-বিদেশি অতিথিদের পণবন্দি করে। কুপিয়ে, গুলি করে মোট ২০ নাগরিককে হত্যা করে জঙ্গিরা। নিহতদের মধ্যে ইটালি, জাপান, ভারতের ও বাংলাদেশের বাসিন্দারা ছিলেন। সেই রাতে পণবন্দিদের মুক্ত করতে গিয়ে অভিযানে জঙ্গিদের বোমায় শহিদ হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলায় শুধু বাংলাদেশই নয়, ইসলামিক জেহাদের নৃশংসতা দেখে কেঁপে উঠেছিল গোটা বিশ্ব।
এই মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনাল নব্য জেএমবি-র সাত সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয় ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনাল।এই সাত জঙ্গি – রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, মহম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, হাদিসুর রহমান, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মামুনুর রশিদ ওরফে রিপন ও শরিফুল ইসলাম খালেদ। তারা এখন কারাগারে। ওই রায়ে একজনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়। তার নাম মিজানুর রহমান।
নিয়ম অনুযায়ী, নিম্ন আদালত কোনও আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের দিলে, তা কার্যকর কতে হাই কোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ‘ডেথ রেফারেন্স’ হিসেবে পরিচিত। কোনও মামলার রায়ের পর মামলা সংক্রান্ত সব কাগজপত্র হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হয়, যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। হোলি আর্টিজান মামলার ডেথ রেফারেন্স প্রস্তুত হয় ২০১৯ সালে, ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইবুনালের রায়দানের পর। ডেথ রেফারেন্সের শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার বৃত্তান্ত প্রস্তুত করা হয়। এদিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা পৃথক আবেদন করে।
ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের করা আপিল ও জেল আপিল একসঙ্গে শুনানির জন্য গত ১৫ জানুয়ারি হাই কোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। পরে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মহম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। ১১ অক্টোবর শুনানি শেষ হয়। সোমবার হল রায়দান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.