সুকুমার সরকার, ঢাকা: অযোধ্যায় রামমন্দিরের (Ram Mandir)উদ্বোধন হয়ে গেল সোমবার। এমন দিনের প্রতীক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশের হিন্দুরাও। আজ তাঁরা আনন্দে উদ্বেল, রাম আবেগে ভাসছেন। বাংলাদেশের (Bangladesh)সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অধীর আগ্রহের সঙ্গে সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সাক্ষী রইলেন। এর আগেই গত বুধবার রামমন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করার আগেই, ভূমি পুজোর প্রসাদ বা ‘অক্ষত চাল’ পৌঁছে দেওয়া হয় বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়।
বুধবার দুপুরে এই প্রসাদ হরিদাসপুর-বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। ভারতের হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু (Hindu) মহাজোট নেতাদের কাছে ২০০ প্যাকেট প্রসাদ হস্তান্তর করা হয়। সেই সঙ্গে মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য আমন্ত্রণপত্র এবং লিফলেট দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনের নেতাদের হাতেও। সেখানে কখন কী হবে, কখন কোন অনুষ্ঠান হবে তা আমন্ত্রণ পত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়। তাই অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের হিন্দুরাও।
রামমন্দির প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (Dhaka University) অধ্যাপক ডঃ আর.এম, দেবনাথ বলেন, এমন উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের বিকেলে পুজো দিচ্ছিলেন মন্দিরের ঠাকুর স্বাধীন বন্দ্যোপাধ্যায়। চারপাশে বসে প্রণাম নিবেদন করছিলেন ভক্তরা। রামমন্দির প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তাঁরা জানান, ”আজ আমরা মহা খুশি, রামমন্দির উদ্বোধন হলো।” এদিকে বাবরি মসজিদ জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ ও উদ্বোধন করা হয়েছে, এ অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী এদিন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট যশোর শাখার আহ বায়ক অমল অধিকারী বলেন, ”দীর্ঘদিন ধরে আমরাও চাইছিলাম অযোধ্যায় রামমন্দির করা হোক। অবশেষে, এতদিন পরে উদ্বোধন হয়েছে কাঙ্খিত সেই রামমন্দির। এটা হিন্দু জাতির মানুষের কাছে খুবই গর্বের দিন। আর এই মন্দিরের প্রসাদ হাতে পেয়ে বাংলাদেশি হিসাবে আমরাও গর্ববোধ করছি।” তিনি জানান, বাংলাদেশে ৬৪টি জেলায় বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রসাদ চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা-সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট কমিটির নেতারা জানান, তাঁরা এদিন সশরীরে অযোধ্যায় যেতে না পারলেও তাঁদের সবার মন পড়ে ছিল রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান ঘিরে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছোটখাটো অনেক রামমন্দির আছে। সেই মন্দিরগুলিতে সোমবার বিশেষ পুজোরও আয়োজন করা হয়। যেখানে রাম মন্দির নেই, সেখানে অন্য মন্দিরে বা নিজেদের বাড়িতে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার সময়ে বিশেষ পুজো এবং আরাধনা করেছি।
এদিকে বাবরি মসজিদ জায়গায় রামমন্দির নির্মাণ ও উদ্বোধন করা হয়েছে – এই অভিযোগ এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী প্রতিবাদ হিসেবে মানববন্ধন করেছে। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে ভিসি চত্বর হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ভারত সরকার বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির তৈরি করে মুসলিম জাতিসত্তার উপর আঘাত হেনেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.