সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ। বাংলাদেশে ফের গ্রেপ্তার ঝুমন দাস নামের এক হিন্দু যুবক। বুধবার তাঁর গ্রেপ্তারির কথা জানায় পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন ফেসবুক পোস্টের (Facebook Post) জন্য সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাসকে (২৬) ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ঝুমনকে বাড়ি থেকে আটক করে। পরে রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক আমিনুল ইসলাম বলেন, “ঝুমন দাস কয়েকদিন আগে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে মসজিদ ও মন্দির নিয়ে একটি পোস্ট করেছেন। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চ মাসে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় ঝুমনকে। তারপরও নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দিরে হামলা চালায় মৌলবাদীরা। পরে ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের হয়। ঝুমন দাশের স্ত্রী সুইটি রানী দাশ জানিয়েছেন, চারদিন ধরে তাঁদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিশ অবস্থান করছে। গতকাল দুপুরে কয়েকজন পুলিশকর্মী তাঁদের বাড়িতে যান। তাঁরা ঝুমনকে বলেন, এলাকার নোয়াগাঁও বাজারে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন আধিকারিক ঝুমনের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর ঝুমন ও সুইটি নৌকায় ওঠেন। কিন্তু পরে নোয়াগাঁও বাজার না গিয়ে তাঁদের শাল্লা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সারা দিন তিনি ঝুমনের সঙ্গে থানায় ছিলেন। পরে রাত নয়টার দিকে তিনি ঝুমনকে থানায় রেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। আজ বুধবার সকালে থানায় ফোন দিলে পুলিশ তাঁকে জানায়, ঝুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে সুইটি দাশ বলেন, তিনি ঝুমনকে ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। ঝুমন তাঁকে জানিয়েছেন, কেউ ক্ষুব্ধ হওয়ার মতো কিছু তিনি লেখেননি। তবে সম্প্রতি নারীদের পোশাক নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে ঝুমন দু-একটি পোস্ট দিয়েছেন। তবে তা কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নয়। বলে রাখা ভাল, এই মামলায় ২০২১-এর ২৩ মার্চ ঝুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ৬ মাস ১২ দিন কারাবাসের পর গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান ঝুমন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.