Advertisement
Advertisement

Breaking News

Hilsha

নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইলিশ কিনতে পদ্মার পাড়ে ভিড়, হচ্ছে হোম ডেলিভারিও

নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে অপরাধীদের জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডও ভোগ করতে হচ্ছে।

Hilsha fishes selling openly in Bangladesh after restriction
Published by: Paramita Paul
  • Posted:October 20, 2024 5:04 pm
  • Updated:October 20, 2024 5:04 pm  

সুকুমার সরকার, ঢাকা: ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশে ২২ দিন শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। এ সময় নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহণ বন্ধ। কিন্তু কিছু অসাধু মৎস্যজীবী বসে নেই। লুকিয়ে-চুরিয়ে ইলিশ শিকারের চেষ্টা চলছে। পদ্মা-মেঘনা নদী সংলগ্ন জেলায় প্রশাসন কড়া নজরদারি সত্বেও থেমে নেই ইলিশ শিকার। নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে অপরাধীদের জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডও ভোগ করতে হচ্ছে।

রাজবাড়ি জেলায় পদ্মা নদীর অংশ রয়েছে ৪২ কিলোমিটার। পদ্মা নদীর তীরে রাজবাড়ির সদর উপজেলা ও গোয়ালন্দ উপজেলার চরে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। গ্রাহকের কাছে সেগুলো পৌঁছচ্ছে হোম ডেলিভারি। সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের জৌকুড়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত নদী এলাকায় চলছে ইলিশ বেচাকেনা। বিশেষ ক্ষেত্রে রাজবাড়ি শহরে এনে চোরাই ইলিশ হোম ডেলিভারিও দিচ্ছেন অসাধু মৎস্যজীবী ও তাঁদের লোকেরা। পদ্মা থেকে ইলিশ ধরে নদীর তীরে এনেই বিক্রি করা হচ্ছে। ১ কেজির বেশি ওজনের ইলিশগুলো ১ হাজার ৫০০ টাকা ও খোকা (জাটকা) ইলিশ ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে তারা।

Advertisement

ভোলা জেলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করায় ২৮ মৎস্যজীবীকে আটক করা হয়। শনিবার রাজবাড়ীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ মাছ ধরার অপরাধে চার জেলেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন ও গোয়ালন্দ উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় পদ্মা নদীতে ধীবরদের নৌকা নিয়ে মাছ শিকার করতে দেখা গিয়েছে। এ সময় ৬০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে স্থানীয় ৫টি এতিমখানায় দেওয়া হয়েছে এবং ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের ৫০ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে যাওয়ায় ৭ জেলেকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ জনকে ১৫ দিনের ও একজনকে ৭ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১৩ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান। এ সময় মোবাইল কোর্টে চারজন ধীবরকে ৭ দিনের কারাদণ্ড ও ২৬ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এই সাতদিন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যবহৃত অবৈধ ১ লক্ষ ৬২ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং ৩১০ কেজি ইলিশ মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রতিদিনই বিভিন্ন অবৈধ শৌখিন ধীবররা পদ্মা নদী থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ ধরে নদীর কিনারে নিয়ে আসছেন। সেখানে প্রকাশ্যে বড়, ছোট ইলিশ মাছগুলো মৌসুমি মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া সেখানে একটু কম দামে পাওয়ায় মানুষ সেখান থেকে ইলিশ কিনছেন। এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইলিশগুলো আমরা এখান থেকে একটু কম দামে কিনে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে একটু লাভ রেখে বিক্রি করি।

ইলিশ শিকার, সংরক্ষণ, বিপণন, ক্রয় করা নিষিদ্ধ থাকলেও মাদারীপুর জেলার শিবচরের পদ্মা পাড়ের চিত্র একটু ভিন্ন। নদী থেকে সদ্য ধরে আনা তাজা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে নদীর পাড়েই। আর তা কিনতে দুর্গম চরাঞ্চলে ছুটে যাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। অনেকটা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন নিষিদ্ধ মৌসুমে গড়ে উঠা অস্থায়ী ইলিশের হাটে। শিবচরের পদ্মানদী বেষ্টিত বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি, চরজানাজাত ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ে এভাবেই বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পদ্মার পাড়েই মাছের হাট বসে। পদ্মা নদীর ৪/৫টি স্থানে প্রতিদিন ভোর এবং বিকেলে বিক্রি হয় ইলিশ। শনিবার বাংলাবাজার-চরজানাজাত নদীর পাড়ে ইলিশের হাট বসেছে। নদীর পাড়ে একের পর এক ট্রলার এসে ভিড়ছে। ট্রলারে বসেই বিক্রি করছেন ধীবরা। নদীর পাড়েও মাছ নিয়ে সারিবদ্ধভাবে বসেছেন বিক্রেতারা। দরদাম করে মাছ কিনছেন সাধারণ মানুষ। দাম কিছুটা কম। আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি থেকে শুরু মাছের দাম। বড় মাছগুলোর বেশিরভাগই ডিমে পূর্ণ! এক কেজি পরিমাণ ইলিশ নদীর পাড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০০/১৩০০ টাকায়! এছাড়াও পদ্মানদীর বিভিন্ন চর এলাকায় রাতেও মাছ পাওয়া যায়। তবে অভিযানের কারণে চরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মাছ বিক্রি করেন মৎস্যজীবীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement