ফাইল ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছেন। তাহলে তাঁরা বাড়িতে বউদের শাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছেন না কেন? ওনারাও তো ভারতীয় শাড়ি পরেন। এভাবেই কড়া ভাষায় খালেদা জিয়ার দলকে তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশে ভারতীয় জিনিসপত্র বর্জনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। তালিকায় রয়েছে বিএনপি-সহ আরও প্রায় ৬২টি দল।
বুধবার রাজধানী ঢাকার তেজগাঁওয়ে আওয়ামি লিগ কার্যালয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রসঙ্গটি ওঠে। যা নিয়ে হাসিনা কড়া ভাষায় বলেন, “আমি বিএনপি নেতাদের বলব, যাঁরা যাঁরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করবেন, সবাই বাড়িতে গিয়ে তাঁদের বউদের পুড়িয়ে দিন। কারণ তাঁরাও তো ভারতীয় শাড়ি পড়েন। ওনাদের শাড়িগুলো পুড়িয়ে দিচ্ছে না কেন? তাঁদের আলমারিতে যে কয়টা শাড়ি আছে, সব এনে যেদিন ওই অফিসের সামনে পোড়াবেন, সেই দিন বিশ্বাস করব যে আপনারা সত্যি ভারতীয় পণ্য বর্জন করেছেন।” ভারত থেকে চাল, ডাল, তেল, গরমমসলা, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা আমদানির কথা তুলে হাসিনা প্রশ্ন করেন,” ভারত থেকে মশলাপাতি, আদা যা কিছু আসছে, তাঁরা কেউ যেন সেগুলো ব্যবহার না করেন। তাঁদের মশলাবিহীন খাবার রান্না করে খেতে হবে। কাজেই তারা সেটা করতে পারবেন কি না, সেই জবাবটাও তাঁদের দিতে হবে।”
এদিকে ভারতীয় পণ্য বর্জন নিয়ে বিএনপির অন্দরেই তীব্র মতভেদ দেখা গিয়েছে। এনিয়ে দলটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। দলের কট্টরপন্থী নেতারা বিষয়টিকে একটি ‘সামাজিক আন্দোলন’হিসেবে দেখছেন। এতে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপির সরাসরি যুক্ত হওয়াটা সঠিক হবে বলে মনে করছেন না দলের নীতিনির্ধারণী অনেক নেতা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি দলের একজন দায়িত্বশীল নেতার ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণার প্রসঙ্গ তুলে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বিষয়টি বৈঠকে তুলে ধরেন। দলের আরেক সদস্য প্রশ্ন তোলেন, বিএনপি ক্ষমতাপ্রত্যাশী একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এখন ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়ে দল ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কী হবে?
প্রসঙ্গত, গত বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি ভারতীয় পণ্য বর্জনের সমর্থনে বক্তব্য দেন। তিনি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “আওয়ামি লিগ ভারতের সহযোগিতায় নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে। এটা বুঝতে পেরে বাংলাদেশের জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জন করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। ভারতীয় পণ্য বর্জনকে আমরা যৌক্তিক মনে করি। দেশের জনগণের নয়, ভারতের সমর্থনে আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় টিকে আছে। তাদের ক্ষমতায় থাকতে তলেতলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে নয়, আওয়ামি লিগের পক্ষে। ভোটাধিকার হরণ, গণতন্ত্র হত্যা, গুম খুন ও অবিচারের জন্য ভারত দায়ী বলে জনগণ মনে করে। জনগণ তাঁদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে ভারতীয় পণ্য বর্জন করে।” এবার এনিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.