সুকুমার সরকার, ঢাকা: দুর্নীতি, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ঐতিহাসিক এক প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক (World Bank)। তবে তা প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়নি। একক আর্থিক ক্ষমতায় ইতিহাস গড়ে ফেলল বাংলাদেশ (Bangladesh) – পদ্মা সেতু বানিয়ে। শনিবার সেতুর উদ্বোধনে ঢাকায় হাজির ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি। তাঁকে সামনে রেখেই পরোক্ষে বিশ্ব ব্যাংককে একহাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (PM Sheikh Hasina)।
পদ্মা সেতুতে (Padma Setu) অর্থায়নে বিশ্ব ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও দুর্নীতি, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে পিছু হঠেছিল। এ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বাংলাদেশ সরকার সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থে এই সেতু নির্মাণের পথে এগিয়ে যায়। ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার নির্মিত সেই সেতুর উদ্বোধন হল শনিবার। নিজস্ব কোষাগারের অর্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক দৃঢ়তায় পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ক্ষণে এখন বিশ্ব ব্যাংক নিজেই উচ্ছ্বসিত। অর্থ সাহায্যে হাত গুটিয়ে নেওয়া বিশ্বব্যাংক কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন সঙ্গী হিসেবে বিশ্ব ব্যাংক স্বীকার করে যে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জনগণ ও অর্থনীতির জন্য বহুমাত্রিক সুবিধা বয়ে আনবে। এই সেতু দেশে সমন্বিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে গতি সঞ্চার এবং দারিদ্র্য কমাতে ভূমিকা রাখবে।”
বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে সরে যাওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘আমরা নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু গড়ে তুলব।” আর শনিবার ‘স্বপ্নের’ পদ্মা সেতুতে প্রথম টোল দিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে শুরু হল স্বপ্নের সেতুর স্বপ্নযাত্রা। শনিবার বেলা ১২টায় প্রমত্তা পদ্মার বুকে বাঙালির গর্ব ও অহংকারের প্রতীক, বহু কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী ভাষণে কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যর (Sukanta Bhattacharya) কবিতার কথা শোনা গেল তাঁর কথায়। ‘দুর্মর’ কবিতার দুটি লাইন উল্লেখ করলেন তিনি – ‘জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার/ তবু মাথা নোয়াবার নয়।’ হাসিনা বলেন, ‘‘আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.