সুকুমার সরকার, ঢাকা: ব্যক্তি মালিকানায় ৬০ বিঘার বেশি জমি রাখা যাবে না। এর অন্যথায় অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে সরকার। এমনটাই বলা হয়েছে বাংলাদেশের নতুন ভূমি সংস্কার আইন ২০২৩-এর খসড়ায়।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী হাসিনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত সম্মতি দেওয়া হয়েছে বলে খবর। জমির মালিকানার ক্ষেত্রে সীমানির্ধারণ ছাড়াও স্থাবর সম্পত্তির বেনামি লেনদেনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা, বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদের ক্ষেত্রে পালনীয় বিষয়, জমির বর্গাদারের অধিকার-সহ নানা বিষয় আলোকপাত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে সাফ বলা হয়েছে, ব্যক্তি মালিকানায় ৬০ বিঘার বেশি জমি রাখা যাবে না। এর অন্যথায় অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে সরকার। তবে কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।
জানা গিয়েছে, নতুন আইনে বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। সমবায় সমিতি, চা, কফি, রাবার ও ফলের বাগানের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য হবে না। শিল্প কারখানার কাঁচামাল উৎপাদন হয় এমন জমি, রপ্তানিমুখী শিল্প ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতের কাজে ব্যবহার হওয়া জমি, ওয়াকফ ও ধর্মীয় ট্রাস্টের ক্ষেত্রে এই নিয়ম লাগু হবে না।
নতুন প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, আইন ভঙ্গ করলে এক লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা এক মাসের কারাদণ্ড অথবা উভয়েরই বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ভূমি ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু ও তথ্যভাণ্ডার তৈরির কথাও বলা হয়েছে। নতুন আইনে বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন আদালতের আদেশ ছাড়া কোনও আধিকারিক বা কোনও কর্তৃপক্ষ জমি থেকে মালিককে উচ্ছেদ করতে পারবেন না।
গ্রামীণ এলাকায় বাস্তুভিটার উপযুক্ত জমি খাস হিসেবে পাওয়া গেলে মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁর পরিবার, ভূমিহীন কৃষক ও শ্রমিকদের বন্দোবস্তের বিষয়ে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এই আইনে বলা হয়েছে, কোনও বর্গাদার বর্গা চুক্তির আগে মারা গেলে চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই জমি চাষ করতে পারবেন। আইনে আরও বলা হয়েছে, মালিক যদি তাঁর বর্গা দেওয়া জমি বিক্রি করতে চান, তবে প্রথমে বর্গাদারকে জানাতে হবে। বর্গাদার ১৫ দিনের মধ্যে মালিককে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। আর কোনও বর্গাদার ১৫ বিঘার বেশি জমি চাষ করতে পারবেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.