ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ক্রমশ বাড়ছে করোনার প্রকোপ। এবার প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বলি হলেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের হেমাটোলজিস্ট ও ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) মহম্মদ মনিরুজ্জামান। রবিবার বিকেলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (CMH) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আর তার ঠিক পরেরদিনই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। কোনও অবস্থাতেই বড় ধরনের জনসমাগম করা যাবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে ঢাকার গণভবন থেকে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রংপুর বিভাগের অন্তর্গত জেলাগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা করেন হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা সীমিত আকারে বিভিন্ন অফিস খুলে দিয়েছি। মানুষ যাতে রমজানের মধ্যে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্যও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে বড় ধরনের জনসমাগম যাতে না হয়। এতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। আমরা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। তার ফলও পাচ্ছি।
এই ভিডিও কনফারেন্সে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারি, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি-সহ শিক্ষক এবং মসজিদের ইমামরা যোগ দিয়েছিলেন। করোনা থেকে বাঁচতে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সকলকে মেনে চলার অনুরোধ জানান।
এদিকে রবিবার মৃত্যু হওয়া চিকিৎসক মনিরুজ্জামানের পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন থেকে জ্বর ও বুকে ব্যথা অনুভব করছিলেন তিনি। একপর্যায়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। রবিবার সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মারা যাওয়ার পর তাৎক্ষণিক নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হলে তাঁর করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এপ্রসঙ্গে ডা. মহম্মদ এহতেশামুল হক জানান, করোনায় ডা. মনিরুজ্জামানের মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের চারজনকে তাৎক্ষণিক হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সিলেটের এমএজি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈনউদ্দিন। করোনায় মারা যাওয়া প্রথম চিকিৎসক তিনিই ছিলেন।
বাংলাদেশের বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক মুনতাসির মামুনও রবিবার সন্ধেয় করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি হন। এপ্রসঙ্গে ওই হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান এবং হাসপাতালের কোভিড-১৯ চিকিৎসক কমিটির সভাপতি সদস্য ও প্রফেসর ডা. মনিলাল আইচ লিটু জানান, মুনতাসির মামুনের শারীরিক অবস্থা ভাল না। তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি চোখেও ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছেন না। অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেছে। তাঁকে সুস্থ করার সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে। মুগদা হাসপাতালেই তাঁর করোনা টেস্ট করা হবে। এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে করা তাঁর করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.