সুকুমার সরকার, ঢাকা: দেশজুড়ে মাদক কারবার রোধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে হাসিনা সরকার। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও মাদক কারবারিদের সঙ্গে পুলিশ বা র্যাব-এর সংঘর্ষ হচ্ছে। এর মধ্যে ২৫০ জনের বেশি মাদক কারবারিকে খতমও করেছে তারা। কিন্তু, তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না মাদক কারবারের বাড়বাড়ন্ত। এবার মাদক ব্যবসায় নামতে রাজি না হওয়ায় এক কিশোরীকে পুড়িয়ে দিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেপ্তার করে খুনের মামলা করা হয়েছে। আর বাকি ছ’জন আত্মীয়কে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।
নরসিংদী উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরিফুল খানের মেয়ে জান্নাতের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল পাশের গ্রাম খাসেরচরের শিপলু মিঞার। বছরখানেক আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়েও করে তারা। কিন্তু, এরপরই শুরু হয় অশান্তি। জান্নাতকে মাদক ব্যবসা করার জন্য চাপ দেয় শিপলু ও তার মা শান্তি বেগম। এতে রাজি হয়নি সে। গত ২১ এপ্রিল জান্নাত যখন ঘুমোচ্ছিল তখন তার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দগ্ধ হয়ে ছটফট করলেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি । পরে বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের চাপেই জান্নাতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভরতি করা হয়। ২৫ এপ্রিল আদালতে মামলা করে জান্নাতের দাদা মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম। এই মামলার প্রেক্ষিতে সাতদিনের মধ্যে পিআইবি-কে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। কিন্তু, তারপর প্রায় দু’মাস কেটে গেলেও আদালতে জমা পড়েনি রিপোর্ট।
এদিকে গত ৩০ মে মৃত্যু হয় জান্নাতের। ফের পুলিশের দ্বারস্থ হয় তার পরিবার। গত শনিবার জান্নাতকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ শিপলু, হুমায়ুন মি়ঞা, শান্তি বেগম ও ফাল্গুনী বেগমকে গ্রেপ্তার করে নরসিংদী থানার পুলিশ। পরে বিভিন্ন জায়গা তল্লাশি চালিয়ে বাকি ছ’জনকে আটক করা হয়। তাদের নাম সাথী আক্তার, নওসের মিঞা, পারুল বেগম, টিউলিপ, রতন মিঞা ও জাহাঙ্গীর।
এপ্রসঙ্গে স্থানীয় ওসি সৈয়দুজ্জামান বলেন, “পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছ’জনকে আটক করেছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই সব বলা যাচ্ছে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.