ফাইল ছবি
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বড় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে বাংলাদেশে। গণঅভ্যুত্থানের জেরে পদচ্যুত হয়েছেন শেখ হাসিনা। পতন ঘটেছে আওয়ামি লিগ সরকারের। তার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্তে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন হিন্দুরা। তাঁদের বাড়ি-ঘর, সম্পত্তি সব কিছুতে হামলা চালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু হিন্দু মন্দির। এমনকী নমাজ আর আজানের সময়ে দুর্গাপুজোর গানবাজনা বন্ধ রাখতে হিন্দুদের অনুরোধ জানিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার। এই আবহেই আর কদিন পরে হাসিনাহীন বাংলাদেশে পালিত হবে দুর্গোৎসব। আর এই দুর্গাপুজো যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হয় তার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ করছে ড. মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
আসন্ন দুর্গাপুজো নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। মঙ্গলবার ঢাকায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সম্মেলন শেষে তিনি বলেন, “উৎসবমুখর পরিবেশে যেন দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে যাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পুজো উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য অসচ্ছল মন্দিরগুলোর অনুকূলে এবার প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে বরাদ্দ দ্বিগুণ করে ৪ কোটি টাকা করা হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজো উদযাপন উপলক্ষে মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা সুনিশ্চিত করা ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করতে এই সভার আয়োজন করা হয়। এদিনের বৈঠকে পুজো মণ্ডপগুলোয় আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ইউএনও অফিস ও থানা থেকে মনিটরিং করার উপর জোর দেওয়া হয়। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের নির্ধারিত স্থানে শারদীয় দুর্গাপুজোর প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। পুজো মণ্ডপগুলোতে সর্বক্ষণ নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র্যাবের টহল দেবে। পুজো চলাকালীন মণ্ডপ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ, র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। থাকবে আনসার ফোর্সও। সীমান্ত এলাকার পুজোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরি জানিয়েছিলেন, দুর্গাপুজোর আয়োজকদের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। বলা হয়েছে, যে সময়ে নমাজ বা আজান হবে তখন দুর্গাপুজোর সমস্ত সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখা হোক। গান বাজনা হোক বা ঢাক-মন্ত্রোচ্চারণের আওয়াজ, পুজোমণ্ডপ থেকে যেন শব্দ না বেরয়। এই কথা বলার পরে জাহাঙ্গির জানান, তাঁদের এই অনুরোধ মেনে নিতে ইতিমধ্যেই সম্মতি দিয়েছে পুজো কমিটিগুলো। এবার বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে কীভাবে নির্বিঘ্নে দুর্গাপুজো সম্পন্ন করে ইউনুস সরকার, সেদিকে নজর রাখবে ভারতও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.