সুকুমার সরকার, ঢাকা: ওমিক্রনের দাপট। সড়কপথে নয়, ভারত-বাংলাদেশ (India-Bangladesh) যাতায়াতের জন্য এবার আকাশপথই ভরসা। আর এই সুযোগে অসাধু ব্যবসার রমরমা শুরু বাংলাদেশে। বিমানের (Flight fare) ভাড়া একলাফে বেড়ে গেল চারগুণ। কমছে পাসপোর্টযাত্রীর সংখ্যা। ভিসাও মিলছে শুধু আকাশপথে। সড়কপথে যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন খারিজ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষত হরিদাসপুর-বেনাপোল স্থল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়া যাত্রীসংখ্যা কমেছে।
জানা গিয়েছে, আকাশপথে শুধু একদিকের বিমান ভাড়াই আগের তুলনায় চারগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকায়। সাধারণ সময়ে এই ভাড়া থাকে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। রিটার্ন টিকিট কাটলে খরচ পড়ত ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এখন তা কয়েকগুণ বেড়ে গেল। এছাড়া এক সপ্তাহ আগে মিলছে না বিমানের টিকিটও। ডবল ডোজ টিকা নেওয়ার পরও ভারতে যেতে দু’বার করোনা পরীক্ষা করাতে বিপুল টাকা খরচ হচ্ছে যাত্রীদের। নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে এলেও চেকপোস্টে নানাভাবে অর্থ আদায়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বলে অভিযোগ পাসপোর্টযাত্রীদের। এতে জরুরি প্রয়োজনে সময় মতো যাতায়াত করতে না পেরে চিকিৎসা, ব্যবসা ও শিক্ষাখাত বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত সপ্তাহেও দিনে ভারত-বাংলাদেশে তিন হাজারের কাছাকাছি যাত্রী যাতায়াত করত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় হাজার। চলতি সপ্তাহের প্রথম ৫ দিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছেন ৫ হাজার ৬৮৭ জন। এর মধ্যে ভারতে গিয়েছেন ২২৬৭ জন। ভারত থেকে আসা যাত্রীর সংখ্যা ৩৪২০ জন। অবশ্য চিকিৎসা, ব্যবসা, শিক্ষা আর ভ্রমণে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় ১৮ লক্ষ পাসপোর্টযাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করতেন।
করোনা (Coronavirus) সংক্রমণের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ ভ্রমণের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। এতে জরুরি প্রয়োজনে ভারতে যেতে না পেরে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যাত্রীরা। গত দুই বছরেও পিছু ছাড়েনি করোনা। এক এক সময়ে এক একটি নতুন রূপে সংক্রমণ ছড়িয়ে চলেছে। এদিকে,পশ্চিমবঙ্গে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে ঢাকা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত, বিশেষ করে বেনাপোল স্থলবন্দর বন্ধের কথা ভাবছেন।
পশ্চিমবঙ্গে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলায় বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণায় গত সোমবার সকাল থেকে বাংলাদেশের (Bangladesh) বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। ভারত ফেরত ১২ বছরের বেশি বয়সী যাত্রীদের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। মেডিক্যাল ও বিজনেস ভিসা ছাড়া কাউকে ভারতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইমিগ্রেশন বিভাগ।
এদিকে সদ্য ভারত ফেরত চারজন যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে করোনার উপসর্গ পাওয়া গেছে। তাদের যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা চলছে। বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার শুভঙ্কর কুমার মণ্ডল বলেন, ”ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে ভারত ফেরত সন্দেহভাজন যাত্রীদের করোনার র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে।” বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিলের মন্তব্য, ”বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে যাত্রী সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.