সুকুমার সরকার, ঢাকা: নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রভাব। চিন থেকে পণ্য রপ্তানি ক্রমশ কমতে থাকায় এবার বড়সড় প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের উৎপাদন শিল্পে। একে চিনা নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি, তারউপর এর মাঝেই করোনার থাবা। জোড়া ফলায় চিনের বন্দরগুলো থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজের আনাগোনা কমছে। কমছে পণ্য পরিবহণও। যার ফলে কাঁচামালের অভাব প্রকট হচ্ছে শিল্পাঞ্চলগুলিতে। চিন্তিত বাণিজ্য মহল।
চিনা নববর্ষের ছুটির আগে পণ্যবাহী জাহাজগুলি বিভিন্ন কাঁচামাল নিয়ে ভিড়েছিল চট্টগ্রাম বন্দরে। এই বন্দর দিয়েই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যায় বিদেশি সামগ্রী। এরপর করোনার প্রকোপে সতর্ক হয়ে চট্টগ্রাম-সহ একাধিক বন্দরে চিনা জাহাজের আসা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। চিন থেকেও বাইরে যাওয়ার জন্য জাহাজের সংখ্যা কমেছে। ফলে মজুত থাকা প্রায় সমস্ত কাঁচামালই উৎপাদন শিল্পে ব্যবহৃত হয়ে গিয়েছে।
ছুটি শেষে চলতি সপ্তাহে ফের কাজে ফিরেছে চিন। খুলে গিয়েছে বিভিন্ন কর্মক্ষেত্র, কলকারখানা, অফিস-কাছারি। সূত্রের খবর, সেসব জায়গায় নতুন করে সব কিছু তৈরির পর ফের রপ্তানি শুরু হতে পারবে। তার জন্য অন্তত আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। বাংলাদেশের শিল্পমহল জানাচ্ছে, চিন থেকে কাঁচামাল এসে পৌঁছনোর জন্য আরও অন্তত একটি সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। এই এক সপ্তাহ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে নিজেদের উৎপাদনের কাজ। এরপরও করোনা আতঙ্কের প্রভাব থাকতে পারে। যার জেরে রপ্তানির পরিমাণ কমার আশঙ্কা আছে। আগামী ২ থেকে ৩ মাস চিন থেকে বাংলাদেশে এই আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য খুব মসৃণ হবে না বলেই মনে করছে বাংলাদেশের শিল্পমহল।
চিন্তার আরও আছে। আন্তর্জাতিক স্তরে বড় বাজার রয়েছে বাংলাদেশের বস্ত্রশিল্পের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মহিলাদের পোশাক রপ্তানি করে মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করে বাংলাদেশ। এখন এসব দেশ থেকে পাওয়া অর্ডার অনুযায়ী পোশাক তৈরি করে সময়মতো পৌঁছে দেওয়াটাও এই মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যবসায়ীদের কাছে। কারণ, যথাযথ উপকরণ হাতে না এলে, কীভাবেই বা পোশাক তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করবেন প্রস্তুতকারকরা?
নারায়ণগঞ্জের একটি ফ্যাশন সংস্থার হাতে আমেরিকা থেকে মহিলাদের পোশাকের একটি অর্ডার আছে। কিন্তু নির্ধারিত দিনে তা ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন প্রস্তুতকারকরা। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে অনুরোধ সাপেক্ষে ডেলিভারির দিনক্ষণ কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও চিন্তা কমছে না। সবমিলিয়ে, করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক সর্বস্তরে প্রভাব ফেলেছে এইভাবেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.