সুকুমার সরকার, ঢাকা: মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরতকে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় এখনও উত্তপ্ত ফেনীর সোনাগাজি৷ তদন্তে উদাসীনতার অভিযোগে চারজন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল৷ সেই নির্দেশ অনুযায়ী সোনাগাজি থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷ তবে এখনও একই পদে বহাল ফেনীর পুলিশ সুপার এবং সোনাগাজি থানার দুজন এসআই৷ মামলাকারীদের অভিযোগ, উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দপ্তর ঢিলেমি করছে৷ পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে আদৌ কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন মামলাকারীরা। চার পুলিশ কর্তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারির দাবিও জানানো হয়েছে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নিতে রাজি হননি নুসরত৷ সেই ‘অপরাধে’ গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় তাঁর৷ বেশ কয়েকদিন যমে-মানুষে টানাটানির পর হাসপাতালেই মারা যান নুসরত৷ এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া এবং তদন্তে উদাসীনতার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। নুসরতের পরিবারের দাবি মেনে প্রথমে সোনাগাজি থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে বদলি করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সোনাগাজি থানার তদানীন্তন ওসি মোয়াজ্জেম ও এসআই ইকবালকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এসপি জাহাঙ্গির আলম সরকার ও এসআই আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও তাঁদের নন অপারেশনাল ইউনিটে বদলির সুপারিশ করা হয়। কিন্তু আজও তাঁরা একই পদে বহাল রয়েছেন৷
এদিকে, নুসরত হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। কয়েকদিনের মধ্যে চাঞ্চল্যকর এই মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এই ঘটনায় মোট একুশজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ১৮জনকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘‘এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক৷’’ প্রসঙ্গত, এই সুলতানা কামালকেই দিন কয়েক আগে খুনের হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছিল৷ প্রেরক হিসেবে ছিল আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর নাম৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.