সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্যালিপটাস এবং আকাশমণি গাছ পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক। এই যুক্তি দেখিয়ে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণে কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই দুটি গাছ।বৃহস্পতিবার ঢাকায় সংসদ ভবনে দাঁড়িয়ে বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হাবিবুন্নাহার একথা জানিয়েছেন। পরিবেশ মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আওয়ামি লিগের সাংসদ শহিদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নানা আকর্ষণ থেকে মানুষ অতীতে আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের মতো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছ লাগিয়েছে। তবে মানুষ এখন সচেতন। বিগত কয়েক বছরে মনে হয় না কেউ এসব গাছ লাগিয়েছেন। যে গাছগুলো আছে, তা কেটে ফেলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ইউক্যালিপটাস এবং আকাশমণি গাছের উপকারিতা সম্পর্কে সকলেই অবগত। জন্মস্থান অস্ট্রেলিয়া হলেও, প্রায় সবরকম পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা থাকায় পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ইউক্যালিপটাস গাছ দেখা যায়। এর কাণ্ডের দৃঢ়তার জন্য ভাল আসবাবপত্র তৈরির জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পাতা থেকে তৈরি তেল মশানিধন-সহ গেরস্থালির নানা কাজে লাগে। স্বর্ণবর্ণা ফুলের সৌন্দর্যের জন্য আকাশমনি গাছ সুবিখ্যাত। শোভা বর্ধনের জন্য রাস্তার দু ধারে সাধারণত এই গাছ লাগানো হয়। এই বঙ্গে আকাশমণি গাছ সোনাঝুরি নামে অধিক পরিচিত। তাই ইউক্যালিপটাস এবং আকাশমণি গাছের ভাল দিকগুলিকে একলহমায় গুরুত্বহীন করে দিয়ে পরিবেশ মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত স্বভাবতই সমালোচনার মুখে। প্রকৃতিপ্রেমীদের অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, পরিবেশের ক্ষতি করে এই অজুহাতে বৃক্ষনিধন করা আসলে পরিবেশ বিরোধী একটি সিদ্ধান্ত।
তবে পরিবেশবিদরা এও স্বীকার করেছেন যে ইউক্যালিপটাসের ক্ষতিকর কিছু দিক আছে। এই গাছে অধিক পরিমাণে তেল থাকায় এটি দাহ্য। এমনকী এর জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ার বনভূমিতে দাবানলের অন্যতম কারণ হিসেবে ইউক্যালিপটাসকে দায়ী করা হয়। তাই লোকালয়ে এই গাছ তুলনায় কম লাগানো হয়। সেদিক থেকে কিছুটা বিপদের আশঙ্কা থাকেই। তবে এই কারণেই বাংলাদেশের সমস্ত ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তার সঙ্গে একমত হচ্ছেন না পরিবেশবিদদের একটা বড় অংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.