সুকুমার সরকার, ঢাকা: এবার পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে (Bangladesh) ডিজেল আমদানি শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ মার্চ। পাশাপাশি চলছে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়াও। এই বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট আশাবাদী। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) সূত্রে খবর, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Bangladesh PM Sheikh Hasina) ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ডিজেল আমদানির উদ্বোধন করবেন।
বর্তমানে ভারতের শিলিগুড়িতে (Siliguri) চলছে ডিজেল সরবরাহের প্রস্তুতি, আর বাংলাদেশের উত্তর জনপদ পার্বতীপুরে প্রস্তুত হচ্ছে ডিজেল সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা। অবশ্য সময়মতো নির্মাণ সামগ্রী আমদানি করতে না পারায় পার্বতীপুরে নতুন ডিপোর কাজ চলতি বছর শেষ হচ্ছে না। সক্ষমতা থাকায় পুরনো ডিপোতেই সংরক্ষণ করা হবে ভারত থেকে আমদানি করা এই ডিজেল। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, ভারত (India) থেকে পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি শুরু হলে একদিকে সাশ্রয় হবে সময়, অন্যদিকে কমবে জ্বালানি পরিবহণ ব্যয়ও।
বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘চলতি মাসের ১৮ তারিখ ভারত থেকে ডিজেল আসা শুরু হচ্ছে। প্রথমদিকে ১০০০ টন করে ডিজেল আমদানি করা হলেও ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো হবে।’’ উদ্বোধনের এক সপ্তাহ আগে থেকে পরীক্ষামূলকভাবে পাইপলাইনে ডিজেল (Diesel) আসা শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘পার্বতীপুরের পুরনো ডিপোতে যথেষ্ট জায়গা থাকায় সেখানেই আমদানি করা ডিজেল সংরক্ষণ করা হবে। পার্বতীপুর ডিপোর সক্ষমতা রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। নতুন ডিপোর কাজ চলমান। এর আগে এখানেই ডিজেল সংরক্ষণ করা হবে। পাইপলাইনে ডিজেল আসা শুরুর পর আমাদের অনেক সময় সাশ্রয় এবং পরিবহণ ব্যয় কমবে। এতে খুব সহজে উত্তরবঙ্গে ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।’’
বিপিসি সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০ থেকে ৭২ লক্ষ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ডিজেলের চাহিদা ৪৮ থেকে ৪৯ লক্ষ মেট্রিক টন, যার ৮০% সরকার আমদানি করে। বর্তমানে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হচ্ছে। আর পরিশোধিত তেল আমদানি করা হয় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, আরব এমিরেটস, কুয়েত, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়।
এমন পরিস্থিতিতে কম খরচে নতুন উৎস থেকে ডিজেল আমদানির পথ খুঁজছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে রাশিয়া ও ব্রুনেইর সঙ্গেও আলোচনা করছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি তেল আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি ব্যারেলে (১৫৯ লিটার) জাহাজভাড়াসহ অন্য খরচ দিতে হয় গড়ে ১০ ডলার। ভারত থেকে আমদানির ফলে এটি আট ডলার হতে পারে। প্রতি ব্যারেলে দু’ডলার সাশ্রয় করা গেলে এক লক্ষ টনে সাশ্রয় করা সম্ভব প্রায় ১৫ লক্ষ ডলার। এর সুবিধা ভোগ করবে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.