সুকুমার সরকার, ঢাকা: অবশেষে প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের সেই ধানসিঁড়ি নদী। ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বাঘরি ও ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ছত্রকান্দা এলাকায় একসঙ্গে খননের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ জলসম্পদ উন্নয়ন বোর্ড। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন থেকে রাজাপুর সদরের বাঘরি পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলাকা খনন করা হচ্ছে।
দীর্ঘ দু’যুগ প্রাণহীন থাকার পর বহুল প্রতীক্ষিত ধানসিঁড়ির খননকাজ শুরু হওয়ায় নদীপাড়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। ধানসিঁড়ির খননকাজ শেষ হলে, বন্ধ থাকা ঝালকাঠি-রাজাপুর নৌপথের যোগাযোগ আবার শুরু হবে। ফলে খুব সহজে ও অল্পখরচে জেলা সদর থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহণ করতে পারবেন। পাশাপাশি কৃষকদের এক ফসলি জমিগুলো তিন ফসলি জমিতে পরিণত হবে। এর ফলে জেলেদের মাছ ধরার কাজ যেমন সোজা হবে তেমনি স্থানীয় মানুষরাও এই নদী সংস্কারের সুফল ভোগ করতে পারবেন। অপরদিকে সুরক্ষিত থাকবে জীববৈচিত্র্যও।
ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিশখালী ও গাবখান চ্যানেলের মোহনা থেকে ধানসিঁড়ি নদীর উৎপত্তি। সেখান থেকে সাড়ে ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রাজাপুর খালে মিশেছে নদীটি। রাজাপুর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে জাঙ্গালিয়া নদী হয়ে আবার বিশখালীতে মিশেছে ধানসিঁড়ির জলপ্রবাহ। কিন্তু, গত দু’যুগ ধরে ধানসিঁড়ির তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যায়। ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়ে জীবনানন্দের অতিপ্রিয় এই নদী।
যদিও এই খননের কাজে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের একাংশের। তাঁদের কথায়, ধানসিঁড়ি নদীর খনন কাজ শুরু হওয়ার পরে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু, যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে হতাশা বাড়ছে। খননের পর পাড় থেকে দূরে মাটি রাখার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। উলটে খোঁড়া জায়গার পাশেই মাটি তুলে রাখা হচ্ছে। বর্ষার জলে যা ধুয়ে ফের নদীগর্ভেই পড়বে। ফলে ধানসিঁড়ি পুনরায় তার গতিপ্রবাহ হারিয়ে ফেলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.