সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে (Bangladesh) মোদি বিরোধী বিক্ষোভের মূল চক্রী হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করল ঢাকার (Dhaka) গোয়েন্দা পুলিশ। রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন নাশকতার সঙ্গে মোদি বিরোধী বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। তার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারির পর তাকে নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক করেন পুলিশ কর্তারা।
রবিবার দুপুরে কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে ডিসি হারুন-অর-রশিদ বলেন, ”২০২০ সালে মহম্মদপুর থানায় হামলা ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় মামুনুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই মামলার মূল আসামি। আমরা মামলাটি তদন্ত করছিলাম। যথাযথ প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” মামুনুলের বিরুদ্ধে সারা দেশে পুলিশের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, ভাঙচুর-সহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। হারুন বলেন, মামুনুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার আদালতে তুলে রিমান্ডে চাওয়া হবে। মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের পর মামুনুল হককে ডিসি তেজগাঁও কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলামি ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক হিংসা ছড়ায়। ধারাবাহিক এই বিরোধিতার জেরে ১৮ জনের মৃ্ত্যু হয়েছিল। তখন থেকেই পুলিশের স্ক্যানারে ছিল মামুনুল। এর পরপরই ঢাকার অদূরে সোনারগাঁওয়ের একটি অবকাশ কেন্দ্রে এক যুবতী-সহ মামুনুল ধরা পড়ে। তখন ওই যুবতীকে নিজের দ্বিতীয় বিবি বলে দাবি করায় পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। পরে সেই যুবতী নিখোঁজ বলে তাঁর ছেলে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। রিসর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় দু’টি মামলা হয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে।
এছাড়া ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বেশ ক’দিন ধরে তৎপরতা চালাচ্ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অবশেষে রবিবার দুপুরে হেফাজতের এই নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২৬ ও ২৭ মার্চ সফরের আগে পড়ে হিংসা ও ৩ এপ্রিল সোনারগাঁও রিসর্টকাণ্ড ছাড়াও ঢাকায় ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। হেফাজতের এই নেতা ফেসবুক লাইভে এসে দ্বিতীয় বিয়ের দাবির স্বপক্ষে স্ত্রীর কাছে সত্য গোপন করার অবকাশ রয়েছে এমন বক্তব্য দিয়ে নিজ দলের আলেম-ওলামাদের কাছে সমালোচনার শিকার হন। পরে চাপের মুখে সেই ভিডিও নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ডিলিটও করে দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.