সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে ঘটা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ১০ দমকল কর্মী। আহতদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে, ওই ডিপোয় দাহ্য রাসায়নিক মজুত থাকার কথা নাকি জানতই না দমকল। বাংলাদেশ অগ্নিকাণ্ডে প্রকাশ্যে এসেছে এমনটাই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা প্রথাগতভাবে জল দিয়ে নেভানোর চেষ্টা করেছেন, কারণ ডিপোতে যে হাইড্রোজেন পেরোক্সাইড ছিল, সেটা ডিপোর কেউ ফায়ার সার্ভিস আধিকারিকদের জানায়নি। তিনি বলেন, “রাসায়নিক থাকার কথা জানতে পারলে আমরা হয়তো অন্যভাবে এগোতাম। আরও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে পারতাম। ফোম ব্যবহার করতে পারতাম।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, সীতাকুণ্ডের কন্টেনার ডিপোয় ঘটা বিস্ফোরণে (Bangladesh Fire) অন্তত ৩০০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নির্দেশ দিয়েছেন হাসিনা। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানে সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
উল্লেখ্য, এর আগেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী থেকেছে বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ৩ জুন পুরনো ঢাকার নিমতলীর নবাব কাটরায় রাসায়নিক দাহ্য পদার্থের গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় নারী ও শিশু-সহ ১২৪ জন। ২০২০ সালেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে ঢাকায়। সেবারও প্রাণ হরিয়েছিলেন বহু মানুষ।
জানা গিয়েছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোর পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নীল রঙের বেশ কিছু জার। ফেটে বা গলে যাওয়া এসব জারের গায়ে লেখা হাইড্রোজেন পেরোক্সাইড। তাপ পেলে সেগুলো থেকে বিস্ফোরণের ঘটে থাকতে পারে। শনিবার রাত থেকে রবিবার বিকাল পর্যন্ত ওই ডিপোতে ভয়াবহ আগুনের পেছনে ওই হাইড্রোজেন পারোক্সাইডই কারণ বলে মনে করছেন ফায়ার সার্ভিস আধিকারিকরা। দমকল বিভাগের দাবি, ডিপোতে এই রাসায়নিক থাকার খবর তাদের জানানোই হয়নি। সেখানে আর কোন কোন ধরনের রাসায়নিক আছে, সে বিষয়েও তেমন তথ্য নেই তাদের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.