সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যেই বন্যার জেরে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ১৬১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমায় এখন কিছু কিছু জায়গায় জল কমতে থাকলেও আগস্টের শেষে ফের বন্যা (Flood) হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
হাসিনা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দেড়মাস ধরে টানা বৃষ্টি হওয়ার ফলে গত ২৬ জুন থেকে বন্যা শুরু হয়। তিন ধাপে এখনও পর্যন্ত ৩৩ জেলার ৫০ লক্ষের বেশি মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। জলে ডোবার পাশাপাশি বজ্রপাত, সাপের কামড় এবং বিভিন্ন রোগে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে জলে ডুবে ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর বজ্রপাতে মারা গিয়েছেন ১৩ জন। লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জে ১৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে। আর একদিনে জলে ডুবে মারা গিয়েছে ১১টি শিশু।
এপ্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (NHCMC) -এর সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান, বন্যা উপদ্রুত এলাকায় ডায়েরিয়া, চর্মরোগ, চোখ ও শ্বাসনালীর প্রদাহ-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৭৭৩ জন। এরমধ্যে ১০ হাজার ২২ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আধিকারিক মহম্মদ আরিফুজ্জামান ভুইঞাঁ জানান, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকায় জলের পরিমাণ কমছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা এবং পদ্মা নদীতেও জল কমতে পারে। বৃহস্পতিবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অন্তর্গত নদীগুলির ১০১টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে জল কমেছে ৬৩টি পয়েন্টে। বেড়েছে ৩৪টি পয়েন্টে। ১৪টি নদীর ২০টি স্টেশনে বিপদসীমার উপর দিয়ে জল প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে এই পরিস্থিতির মাঝেই আগস্টে ফের বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি আগস্টের মধ্যভাগে স্বাভাবিক হতে পারে। কিন্তু, শেষের দিকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলেও বন্যা পরিস্থিতি আরও সাতদিন দীর্ঘায়িত হতে পারে। আগস্ট মাসে এক থেকে দুটি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হবে বঙ্গোপসাগরে। এর মধ্যে একটি নিম্নচাপের রূপ নিতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.