সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রায় দেড় দশক পর গ্রেপ্তার ঢাকায় বৈশাখী বিস্ফোরণে ফাঁসির আসামি মুফতি শফিকুর রহমান। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের এলিট বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।
পুলিশ সূত্রে খবর, রমনার বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুফতি শফিকুর রহমান পরিচয় গোপন করে নরসিংদীর একটি মসজিদে ইমামের চাকরি নিয়ে ১৪ বছর আত্মগোপনে ছিল। সে বেতন পেত পাঁচ হাজার টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অভিযান চালিয়ে শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব জানিয়েছে, শফিকুর রহমান নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকতুল জিহাদের (হুজি-বি) প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। সে সংগঠনটির আমিরের দায়িত্বও পালন করেছে।
শুক্রবার রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার কমান্ডার খন্দকার আল মইন। তিনি জানান, ২১ বছর আগে রমনার বটমূলে হামলার অন্যতম চক্রী ছিল শফিকুর রহমান। এছাড়া, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালে গ্রেনেড হামলায় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যার সঙ্গে জড়িত ওই জঙ্গি। ২০০১ সালে রমনার বটমূলে হামলার পর ২০০৮ সাল পর্যন্ত সে আত্মগোপন করে সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। ২০০৮ সাল থেকে নরসিংদীর একটি মাদ্রাসায় থাকার পর একটি মসজিদে চাকরি নেয় ওই জঙ্গি।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের পয়লা বৈশাখে ঢাকার রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা কাণ্ডে ১০ জন নিহত ও ২০ জন জখম হন। নিহতের মধ্যে ছিলেন মহিলা আওয়ামি লিগের সভানেত্রী ও রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পত্নী আইভি রহমান। মর্মান্তিক ওই ঘটনায় ঢাকার নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র চন্দ রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মহম্মদ ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ২৩ জুন হত্যা মামলাটির রায় ঘোষণা করে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.