প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের ঘটনা। কয়েকদিন আগেই ধর্ষণের শিকার হয় মাগুরার ৮ বছরের এক নাবালিকা। হাসপাতালে ৮ দিন ধরে লড়াই করার পর মৃত্যু হয়েছে ছোট্ট মেয়েটির। এই ঘটনায় বিএনপির মতো বহু রাজনৈতিক দল মহম্মদ ইউনুসের সরকারের দিকেই আঙুল তুলছে। এই পরিস্থিতিতে ৭ বছর আগের এক ধর্ষণ-খুন মামলায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত।
জানা গিয়েছে, সাত বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর বাড়ির পাশের খেতে সবজি আনতে গিয়েছিল ওই কিশোরী। সবজি নিয়ে ফেরার পথে আসামি জিয়াউর রহমান তাকে জোর করে পাশের খেতে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পর ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এই ঘটনায় মৃত কিশোরীর বাবা থানায় মামলা করেন। কিন্তু সেই থেকে পলাতক ছিল অভিযুক্ত জিয়াউর। আজ মঙ্গলবার সাত বছর আগের ঢাকার দোহার এই ঘটনায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সি মহম্মদ মশিয়ার রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি জিয়াউরকে দুই লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার টাকা আদায় করে মৃত কিশোরীর পরিবারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।
প্রসঙ্গত, গত ৬ মার্চ সকালে মাগুরার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্য়ালে নিয়ে যায় পরিবার। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রেফার করা হয় ঢাকা মেডিক্যালে। এরপরই প্রকাশ্যে আসে নারকীয় ঘটনা। জানা যায়, দিদির শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল ৮ বছরের ওই নাবালিকা। সেখানে বোনের শ্বশুর, ভাসুর ও নাবালিকার জামাইবাবু তাকে ধর্ষণ করে। নাবালিকা আর্তনাদ করলে তার গলা টিপেও ধরে। কিন্তু বরাতজোরে প্রাণে বেঁচে যায় নাবালিকা। সেই থেকে হাসপাতালেই ভর্তি ছিল সে। ১৩ মার্চ সকালে একবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হয় তার। সিপিআর দেওয়ার পর তার হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে। দুপুরে ফের ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’, এবারে সিপিআর দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ১ টায় নির্যাতিতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। নিজের বাড়িতেই কবর দেওয়া হয় শিশুটি। ক্ষোভে ধর্ষণে অভিযুক্ত লিটু শেখ ও তার ছেলের বাড়ি পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা।
এই পরিস্থিতিতে মহম্মদ ইউনুসের সরকারের দিকে আঙুল তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে প্রশাসনের কর্তৃত্ব না থাকায় ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। সরব হয়েছে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলও। এরপরই ১৪ মার্চ থেকে সমস্ত পর্ন সাইট বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “পর্নোগ্রাফির সঙ্গে ধর্ষণের একটা সম্পর্ক রয়েছে। সমাজে এর নেতিবাচক প্রভাব ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।” তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলছে, অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, প্রশাসনের কড়া নজরদারি, সচেতনতা প্রচার ছাড়া কি শুধু পর্ন সাইট বন্ধ করে দিয়েই ধর্ষণ রোখা যাবে? নাকি আরও কড়া আইন বা পদক্ষেপ করতে হবে ইউনুস সরকারকে? তবে এই মুহূর্তে সকলেই চাইছেন ধর্ষণের মতো ঘটনায় যেন অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.