ছবি: প্রতীকী।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড (Death Penalty)। এই বিধান রেখে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) মন্ত্রিসভা। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সংক্রান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। শিগগিরই সংশোধিত আইনটি অধ্যাদেশ (Ordinance) আকারে জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ধর্ষণ ও হত্যায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও, শুধুমাত্র ধর্ষণের ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডই সর্বোচ্চ শাস্তি। এবার এই শাস্তিকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড করা হল।
এই সিদ্ধান্তকে আমজনতা খুশি হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃত্যুদণ্ড কোনও সমস্যার সমাধান নয়। শুধু সাজা বাড়ালেই ধর্ষণের এই মহামারী বন্ধ করা যাবে না। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে, দ্রুত বিচার শেষ করে শাস্তি বাস্তবায়িত করতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের মধ্যে ধর্মীয়, মানবিক ও নৈতিক শিক্ষা বিস্তারের পাশাপাশি আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনতে হবে। কঠোর আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই অপরাধীদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, সবচেয়ে বড় প্রয়োজন, মানুষকে সংশোধন করা। অপরাধী না হয়ে উঠার জন্য জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
সম্প্রতি নোয়াখালিতে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর থেকে রাজধানী ঢাকা-সহ দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের ঝড় ওঠে। মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল-সহ একাধিক কর্মসূচি চলছে গত ৭ দিন ধরে। এসব কর্মসূচি থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’-এর দাবি ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনা সরকার আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ দেশে ধর্ষণ ও নির্যাতনের বিচার হয়। এই আইনের ৯(১) ধারায় বলা আছে, যদি কোনও পুরুষ কোনও নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং এর অতিরিক্তি অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। আর ৯(২) ধারায় বলা আছে, যদি কোনও ব্যক্তি ধর্ষণের পর তার অন্যবিধ কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিতা নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০’ সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আইনটি পাশ হলে, তা শুধু প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য শিশু আইন-২০১৩’র বিধান অনুসরণযোগ্য হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.