সুকুমার সরকার, ঢাকা: আশঙ্কাই সত্যি। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে (Sitrang) বাংলাদেশে প্রাণহানির সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ জনে। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত দেশের ১৪ জেলায় ৩৫ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে। এখনও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বরিশালে।
বরিশালে এখনও বৃষ্টিপাত অব্যাহত। বরিশাল (Barishal) শহরের সব রাস্তা এখনও জলের তলায়। টানা প্রবল বর্ষণ, উঁচু জোয়ারের পাশাপাশি দিনভর ঝোড়ো বাতাসে রীতিমতো বিপর্যস্ত জনজীবন। রাস্তাঘাট জলে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করছে না। অনেক বাড়ি জলমগ্ন। বাড়ির বাইরে বেরতে পারছেন না সাধারণ নাগরিকরা। জেলার সব নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়ে জোয়ারের জল বইছে। বরিশালের আবহাওয়া দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বরিশালে ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত আরও দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এর প্রভাবে চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ-আট ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের জলে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বরিশালের তুলনায় কম হলেও চট্টগ্রাম এবং ঢাকার পরিস্থিতিও বেশ চিন্তার। বহু রাস্তায় এখনও পড়ে রয়েছে গাছ। বহু জায়গায় জমে জল। এখনও বিদ্যুৎহীন বিস্তীর্ণ এলাকা। বিভিন্ন এলাকায় এখনও প্রায় ৮০ লক্ষ গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে মঙ্গলবারের মধ্যে ৭০ শতাংশ গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে বলেই দাবি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ দপ্তরের। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ১০ লক্ষ মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই অবশ্য বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুর্যোগ কেটে রোদ উঠতেই সরকারি আধিকারিক, মন্ত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েছেন। উপকূলের জেলাগুলি – ভোলা, নোয়াখালি, কুমিল্লা, বরগুনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি (Damage) হয়েছে। প্রাণহানির খবর বেশি এসেছে ভোলা, কুমিল্লা থেকে। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই মৃত্যু হয়েছে গাছে চাপা পড়ে। দেশের প্রায় ৭ হাজার আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ (Electricity connection) সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। ট্রান্সমিশনে আঘাত না হলেও অনেক পোল ভেঙে গেছে। প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ বিদ্যুৎহীন। এমনই হিসেব দিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নজরুল হামিদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.