সুকুমার সরকার, ঢাকা: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে অতি দ্রুত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কেন না বাংলাদেশে জনবসতির ঘনত্ব খুব বেশি। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে জাতীয় প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদান পরিকল্পনা নথিতে এমন আশঙ্কার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমে সংক্রমণ রুখতে বাংলাদেশে ৫৫ হাজার ৫৮৩ ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে সেই সংখ্যা কমেছে। এখন কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২৬ হাজার জন। এর মধ্যে মারা গিয়েছেন পাঁচজন। নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হওয়ায় বাকিদের কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে করা হয়েছে। সোমবার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (IDCR) এF তথ্য জানিয়েছে। বাংলাদেশে দুভাবে কোয়ারেন্টাইন করা হচ্ছে, একটি হোম কোয়ারেন্টাইন এবং অন্যটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন।
গত শনিবার রাতে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের তথ্য কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, রাষ্ট্রসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর নাগরিক সমাজের বেশ কিছু অংশীদার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ওই পরিকল্পনা নথি তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তরফে বিভিন্ন দেশকে যে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, তার সঙ্গে সংগতি রেখে তৈরি করা ওই পরিকল্পনা নথির উদ্দেশ্য হল বিশ্বব্যাপী তৈরি মহামারির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে রাষ্ট্রসংঘের সংস্থা ও অংশীদারদের কার্যকরভাবে প্রস্তুত করা। রাষ্ট্রসংঘ তথ্যকেন্দ্র তার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদান পরিকল্পনা নথি তৈরির কথা বললেও সেখানে বাংলাদেশে করোনার প্রাদুর্ভাবে সম্ভাব্য মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পাওয়া যে মডেল পদ্ধতির দ্বারা এই নথিটি তৈরি করা হয়েছে তাতে দেখানো হয়েছে সংক্রমণ রুখতে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এই মহামারির কতটা বিস্তার ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তবে পরিকল্পনা নথি প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সঙ্গে জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা নথির শুরুতেই করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা অনুধাবন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এটি এমন একটি প্রাণঘাতী রোগ যা আমাদের সাড়া দেওয়ার গতির চেয়ে বেশি গতিতে সংক্রমিত হয়। ৭৭০ কোটি জনগোষ্ঠীর এই বিশ্বে করোনা ভাইরাস মহামারি সংক্রমণের হার উচ্চ ও আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় জনঘনত্ব বিবেচনা করে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত পন্থা অবলম্বন করে ধারণা করা যায়, প্রতিরোধমূলক উদ্যোগ নেওয়া না হলে মহামারির প্রভাবে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।
ঢাকায় রাষ্ট্রসংঘ তথ্যকেন্দ্র জানায়, বাংলাদেশ সরকার, রাষ্ট্রসংঘ, নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিতে অতি দ্রুততার সঙ্গে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাধ্যতামূলক ‘কোয়ারেন্টাইন’ ও ‘আইসোলেশন’, এই ভাইরাসটির ঝুঁকির ব্যাপারে ব্যাপকভাবে অবহিত করা, সামাজিক দূরত্ব, সামাজিক সুরক্ষা এবং বিদ্যালয় ও জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলো বন্ধ করে দেওয়া। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া কমানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার সঙ্গে রাষ্ট্রসংঘ সম্পূর্ণভাবে একমত ও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.