সুকুমার সরকার, ঢাকা: পাকিস্তানের রণতরীকে নোঙর ফেলার অনুমতি দিল না বাংলাদেশ। সূত্রের খবর, পাক নৌসেনার কোনও যুদ্ধজাহাজকে বাংলাদেশের বন্দরে জায়গা দেওয়া হবে না। পর্দার আড়ালে হওয়া এক আলোচনায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।
জানা গিয়েছে, আগস্টের ৭ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর ফেলার অনুমতি চেয়েছিল পাক নৌবাহিনীর রণতরী ‘পিএনএস তৈমুর’। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ঢাকা। তাৎপর্যের বিষয় হল, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মৃত্যুদিন। ১৯৭৫ সালে ওইদিনই ঢাকার ধানমান্ডিতে পাকিস্তানের মদতে মুজিবকে খুন করে বাংলাদেশ ফৌজের একাংশ আধিকারিক ও সেনা। জাতির এই শোকদিবসে পাকিস্তানের জাহাজকে নোঙর ফেলতে দেওয়া বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করার শামিল বলেই মনে করছে ঢাকা। এছাড়া, হাসিনার আওয়ামি লিগের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত। তাই ঢাকার এই পদক্ষেপকে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক জয় বলেই মনে করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, রণতরী ‘পিএনএস তৈমুর’ চিনে (China) নির্মিত। সাংহাই বন্দর থেকে প্রথম সফরে পাক নৌসেনায় যোগ দিতে করাচির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে টাইপ ০৫৪ এ/পি ফ্রিগেটটি। মাঝপথে কম্বোডিয়া ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে মহড়া সেরেছে তৈমুর বলে খবর। সেখান থেকেই চট্টগ্রাম হয়ে করাচি যাওয়ার কথা ছিল জাহাজটির। কিন্তু বাংলাদেশ অনুমতি না দেওয়ায় এবার শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে নোঙর করবে পিএনএস তৈমুর বলে জানা গিয়েছে। আগস্টের ১২ তারিখ কলম্বো বন্দরে পৌঁছবে যুদ্ধজাহাজটি।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি (Pakistan) নৌবাহিনীর জন্য চারটি টাইপ ০৫৪ এ/পি ফ্রিগেট তৈরি করছে চিন। এই শ্রেণির দ্বিতীয় জাহাজ হচ্ছে ‘তৈমুর’। জুনের ২৩ তারিখ পাক নৌসেনায় আনুষ্ঠানিকভাবে শামিল হয় জাহাজটি। এর আগে পাক নৌসেনার হতে গত জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানের হতে এসেছে এই ক্লাসের প্রথম ফ্রিগেট ‘পিএনএস তুঘরিল’। বিশ্লেষকদের মতে, আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরে ভারতীয় নৌসেনাকে ঘিরে ফেলতে পাকিস্তানের হাত মজবুত করছে চিন। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকেও ডোলে টানার চেষ্টা করছে কমিউনিস্ট দেশটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.