সুকুমার সরকার, ঢাকা: বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মধ্য দিয়েই বুধবার সমাপ্ত হল বাংলাদেশের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়। নির্বাচন শুরু হওয়ার পরই একটি উপজেলায় দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোল বাঁধে। এমনকি গুলিও চলে। এদিকে, ভোট চলাকালীন অসুস্থ হয়ে একটি ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের মৃত্যুর খবরও মিলেছে।
জানা গিয়েছে, ভোট শুরু হতেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ঘ বেঁধে যায়। ঢাকার অদূরে পদ্মাপাড়ের জেলা মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমিরুল ইসলাম ও মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহ নামে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সর্মথকদের মধ্যে ঝামেলা হয়। গুলির লড়াই চলে। সেই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৬ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পুলিশ। এদিন দুপুর ১টার দিকে গজারিয়া উপজেলার ইসমানিচর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৫ জন জখম হয়েছেন। এছাড়া মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। অভিযোগ সংঘর্ষের মধ্যে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এই ঘটনায় জখম অন্তত ১০।
অন্যদিকে, সিলেটের চারটি উপজেলায় সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রগুলো ছিল নিরুত্তাপ। সিলেট সদর উপজেলার খাদিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শাসকদলের ছাত্রলিগ কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে দুই দফায় প্রায় ৩৫ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। ছাত্রলিগের নেতাকর্মীরা দলবেঁধে নারীদের ৩টি বুথে ঢুকে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময় নির্বাচনী কর্মকর্তারা ভয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষে চলে যান। এছাড়া সিলেটের দলদলি ভোটকেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন চা শ্রমিকরা। এ নিয়ে তারা হট্টগোল শুরু করলে দুপুর দেড়টা থেকে ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। বেলা আড়াইটের দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন চা বাগানের ভোটাররা।
বলে রাখা ভালো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হবে না এই অভিযোগ তুলে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করেছিল বিএনপি। একই অভিযোগ তুলে এই উপজেলা নির্বাচনও বয়কট করেছে দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। তবে দলের নির্দেশ তুড়ি মেরে বিএনপির বেশ কিছু নেতা এই ভোটপ্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন। এই দেড়শোর উপর বিএনপি নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে পুরনো সুরেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি বলেছেন,”সরকারের ফাঁদে পা না দিয়ে দেশের জনগণ সর্বান্তকরণে উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে।” আর আওয়ামি লিগের হাইকমান্ড থেকে আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, মন্ত্রী-সাংসদ বা দলের শীষ পর্যায়ের নেতাদের আত্মীয়-স্বজন এই নির্বাচনে লড়াই করতে পারবেন না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.