হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন শেখ হাসিনা। টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বার্তা দিয়েছিলেন ঢাকার সঙ্গে একযোগে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’প্রকল্পে কাজ করার। তার পর থেকেই বাংলাদেশকে কাছে টানতে আরও মরিয়া হয়ে উঠেছে বেজিং। দেশে আনাগোনা বেড়েছে চিনা আধিকারিকদের। এবার হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত। ফলে বন্ধুদেশের উপর কতটা প্রভাব বিস্তার করছে ‘ড্রাগন’ সেদিকেই তীক্ষ্ণ নজর রাখছে ভারত।
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে চায় চিন। তাই ঘনঘন এদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করছেন চিনের উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকরা। বুধবার প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। আলোচনার পর সংবাদমাধ্যমে ওয়েন বলেন, “বাংলাদেশ ও চিনের কৌশলগত সম্পর্ক প্রতিনিয়ত গভীর হচ্ছে এবং পারস্পারিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ চলছে। বর্তমানে দুই দেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ চিন। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বাংলাদেশ যেন আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে সে বিষয়ে সমর্থন রয়েছে আমাদের। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যেও চিন সহযোগিতা করবে।” এদিনের বৈঠকে মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি, রোহিঙ্গা সমস্যা-সহ আরও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান দিনে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ফলে ঢাকার সঙ্গে ব্যবসা করে ঘরে টাকা তুলতে চায় বেজিং। এছাড়া ভারত উপমহাদেশে কৌশলগত অবস্থান মজবুত করতে বাংলাদেশেও পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দিয়েছে চিন। হাতিয়ার বেল্ট অ্যান্ড রোড। ২০১৬ সালে জিনপিংয়ের সফরকালে বাংলাদেশকে ২৭টি প্রকল্পে ২ হাজার কোটি ডলার সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ফলে কমিউনিস্ট দেশটির এই প্রকল্পে শামিল হয়েছে ঢাকাও। জানা গিয়েছে, সুদূর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে হাসিনা সরকারের কাছে একটি হাইওয়ে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে চিন। কূটনীতিকদের ধারণা ভারতের প্রতিরক্ষা জনিত উদ্বেগের কথা মাথায় রেখেই এই মুহূর্তে বেজিংকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে রাজি নন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বলে রাখা ভালো, মুখে চিন (China) যাই বলুক না কেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প আসলে ফাঁদ বলেই মনে করেন অধিকাংশ বিশ্লেষক। পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে ঋণের ফাঁদ পেতেছে কমিউনিস্ট দেশটি। ভারত বরাবর এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে। কারণ, চিনা প্রকল্পের একটি অংশ গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.