ফাইল ফটো
সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ১১ লক্ষ রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে চিন (China) এতদিন মায়ানমারের পক্ষেই ছিল। আচমকা ভোলবদল করে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াল। ঢাকার ঘনিষ্ঠ হওয়ার জন্য বেজিংয়ের এই চেষ্টা বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
তিন বছর আগে মায়ানমার সেনার নির্মম অত্যাচারের জেরে প্রাণ বাঁচাতে দফায় দফায় রোহিঙ্গারা (Rohingya) পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়। এতদিন এই বিষয়ে বিপরীত অবস্থানে থাকলেও এবার রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া এখনও শুরু না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করল চিন। রবিবার ঢাকায় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং (Li Jiming) । এই সময়ে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরানোর বিষয়ে চিনের সহযোগিতা চান বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হলে তারা এই এলাকার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। এমনকী কিছু রোহিঙ্গা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে বলেও চিনা রাষ্ট্রদূতকে জানান ড. মোমেন।
সম্প্রতি কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে দু ‘দল রোহিঙ্গার মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে ৮ জন নিহত হয়। অন্য শিবিরগুলিতেও কাঁটা তারের বেড়া না থাকায় হিংসা ও অপরাধের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে বলেও জানান তিনি। আরও উল্লেখ করেন, প্রত্যাপর্ণ প্রক্রিয়া দেরি হওয়ায় দিনে দিনে রোহিঙ্গা এবং বিদেশি সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর স্থানীয় জনগণের ক্ষোভ বাড়ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তে মায়ানমার বেশি পরিমাণ সৈন্য মোতায়েন করার ফলে ঢাকা চিন্তায় রযেছে বলেও অবহিত করেন।
এপ্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সাহায্য দেওয়া এবং জীবনযাত্রার উন্নয়ন করা এই সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট নয়। বরং তাঁদের দেশে ফেরানোর মাধ্যমে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার।’ এই বিষয়ে চিনা রাষ্ট্রদূতও তাঁর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। দেখা করার সময় চিনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. মোমেনকে লেখা সেদেশের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইর একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। ওই চিঠিতে হংকংকে চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করায় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীকে চিনের বিদেশমন্ত্রী ধন্যবাদও জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.