সুকুমার সরকার, ঢাকা: তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদে চিনের বাঁধনির্মাণ প্রকল্প নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ। ভারতের সুরেই সুর মিলিয়ে বেজিংয়ের প্রকল্প নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ঢাকা। তাই এবার দুই পড়শি দেশকে আশ্বস্ত করল চিন (China)। বেজিংয়ের বক্তব্য, ঢাকা ও নয়াদিল্লির স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই বাঁধটি নির্মাণ করা হবে। তবুও চিনের উদ্দেশ্য নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে ঢাকা।
তিব্বতে ব্রহ্মপুত্র নদে একটি বড় বাঁধ তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে চিন। জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এই ‘মেগা ড্যাম’টি তৈরি করা হবে। আগামী বছর থেকে শুরু হতে পারে এই প্রকল্পের কাজ। রবিবার বাঁধ নির্মাণ কোম্পানির প্রধানকে উদ্ধৃত দিয়ে দেশটির সরকারি গণমাধ্যম এই খবর জানিয়েছে। চিনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ইয়ান ঝিয়ং জানান, জলসম্পদ এবং দেশে বিদ্যুৎ নিরাপত্তার জন্য এই প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হচ্ছে। দেশটির ১৪তম পঞ্চবার্ষিকী (২০২১-২৫) পরিকল্পনায় এ প্রকল্প প্রস্তাবনা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার চিনের জলবিদ্যুৎ প্রকৌশল সোসাইটির ৪০তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে ইয়ান ঝিয়ং বলেন, “এটি চিনের জলবিদ্যুৎ প্রকৌশলের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী প্রকল্প হবে।”
এদিকে, ভারত (India) সরকার চিনকে ইতিমধ্যে কয়েক দফায় তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। বাঁধ নির্মাণের ফলে ভারতে ব্রহ্মপুত্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে চিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে চিন তিব্বতে তাদের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ স্টেশন চালু করে। এর ব্যয় ছিল দেড় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্রহ্মপুত্র এশিয়া মহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নদ। এর উৎপত্তি হিমালয় পর্বতমালার কৈলাস শৃঙ্গের কাছে জিমা ইয়ংজং হিমবাহে। যা তিব্বতের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। তিব্বতের পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে ব্রহ্মপুত্র ভারতের অরুণাচলে প্রবেশ করেছে। তারপর অসমের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্র দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়েছে। ময়মনসিংহ জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভৈরববাজারের দক্ষিণে মেঘনায় পড়েছে। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এক কালের প্রশস্ত এই ব্রহ্মপুত্র এখন শীর্ণকায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.