সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভারতের প্রভাব খর্ব করতে এবার বাংলাদেশকে লগ্নির ‘টোপ’ চিনের। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসমাপ্ত সফরে ১৬০০ কোটি টাকা সাহায্যের ঘোষণা করেছে বেজিং। বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রক থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেজিংয়ের গ্রেট হলে চিনের (China) প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি ছিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল-সহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। এছাড়া বাংলাদেশ ও চিন আর্থিক নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে স্থানীয় মুদ্রা নিষ্পত্তির বর্ধিত ব্যবহারকে উৎসাহিত করেছে। চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে ৮-১০ জুলাই বেজিং সফরে যান হাসিনা (Sheikh Hasina)। মেয়ের অসুস্থতার কারণে সফরের একদিন আগেই, বুধবার রাতে ঢাকা ফিরে আসেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে তাতে গোটা সফরের বিশেষ কোনও ক্ষতি সমস্যা হয়নি বলেই খবর।
হাসিনার চিন সফরে আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে দু দেশ আলোচনা সাপেক্ষে সহমত হয়েছে বলে খবর। পরস্পরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না বলে বাংলাদেশ (Bangladesh) ও চিন সম্মত হয়েছে। ঢাকা জানিয়েছে, তারা ‘এক-চিন’ নীতির প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতির কথা ফের প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন সফর শেষে ঢাকা-বেজিং যৌথ ঘোষণায় এ কথা বলা হয়েছে। দুই প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে ২১টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। বেজিংয়ের (Beijing) সেন্ট রেজিস হোটেলে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদের উপস্থিতিতে ২২তম সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্মানে গ্রেট হলে আয়োজিত চিনের রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন।
যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, ঢাকা-বেজিং উভয় পক্ষ একে অপরের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, একে অপরের মূল স্বার্থ, প্রধান উদ্বেগের বিষয়গুলোতে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সমর্থনের প্রতি নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। চিনা পক্ষ দৃঢ়ভাবে বাংলাদেশকে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ভিশন-২০৪১ এর অধীনে পরিকল্পিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার এবং স্বাধীনভাবে তার জাতীয় অবস্থার সঙ্গে উপযোগী একটি উন্নয়ন পথ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
বাংলাদেশ ‘এক-চিন’ নীতি এবং তার অবস্থানের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, চিনের সরকার সমগ্র চিনের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাইওয়ান চিনের অংশ। বাংলাদেশ চিনের মূল স্বার্থ, জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় চিনের প্রচেষ্টা সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে চিনকে সমর্থন করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.