জামাত-ই-ইসলামির আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বমহিমায় ফিরছে জামাত। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে নব গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে পাকিস্তানপন্থী দলটি। মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার আসার পরই জামাতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে। এবার সুযোগ বুঝে জামাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে চিন! জামাত-ই-ইসলামির আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। কোন কৌশল বেজিংয়ের?
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো সূত্রে খবর, সোমবার বিকেল চারটে নাগাদ রাজধানী ঢাকার মগবাজারের জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎপর্ব হয়। চিনা দূতাবাসের ডেপুটি অ্যাম্বাসাডর-সহ আরও দুজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে জামাতের আমির শফিকুর রহমান জানান, “আমাদের বৈঠকটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ হয়েছে। আমরা দীর্ঘ এক ঘণ্টা দুই দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছি। চিন আমাদের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমরা অনুরোধ করেছি, তাঁরা যেন বাংলাদেশে আরও বেশি করে বিনিয়োগ করেন। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য আমরা তাঁদের আরও সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা আশা করছি, তাঁরা এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন।”
জামায়াতের আমির আরও বলেন, “উভয় দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন ঘটিয়ে আমরা যেন একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পারি, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের বিষয়গুলো আলোচনায় স্থান পেয়েছে। আমরা আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে দুদেশের জনগণ, দুই দেশের সরকার, দলের সঙ্গে দল আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ পাবে। আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে এ ধরনের পারস্পরিক সংলাপ দুই দেশের স্বার্থে অব্যাহত থাকবে।” পরে চিনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জামায়াতের আতিথেয়তায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ একটি সুন্দর দেশ। জামায়াত-ই-ইসলামি একটি সুশৃঙ্খল দল। চিনের মানুষ বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়। আমরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নতি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাব।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন সব সময় বাংলাদেশে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের জাল বিস্তার করতে চায়। হাসিনার আমলেও এনিয়ে উদ্যোগী হয়েছিল বেজিং। কিন্তু আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর নতুন করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে কমিউনিস্ট দেশটি। জামাতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝতে চাইছে চিন। জামাতের মতো দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে কাছে টানতে মরিয়া তারা। চিন যাই বলুক না কেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প আসলে ফাঁদ বলেই মনে করেন অধিকাংশ বিশ্লেষক। পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে ঋণের ফাঁদ পেতেছে চিন। ভারত বরাবর এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে এসেছে। কারণ, চিনা প্রকল্পের একটি অংশ গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে। ফলে এখন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কতটা মজবুত বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে চিনের সেদিকেই নজর ভারতের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.